সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

কাজ চলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম

দীর্ঘ ১০ মাস যাবৎ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে বরগুনার তালতলী উপজেলার বগীর হাট-তালতলীর বাঁধঘাট পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও সংস্কার কাজ। সড়কটি উপজেলার বৃহত্তম ও জেলার সঙ্গে বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বার। সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বর্তমানে সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় বৃদ্ধ, শিশুসহ মোটরসাইকেল চালকদের যাতায়াতে এবং শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। উপজেলা এলজিইডির অবহেলার কারণে প্রথম ধাপে এই প্রকল্পের সময় পার হলেও ২৫ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

জানা যায়, গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উপজেলার ছোটবগী থেকে তালতলী বাঁধঘাট পর্যন্ত ৯.৭০০ কিলোমিটার রাস্তা প্রশস্তকরণ ও সংস্কার প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয়। কাজে ১৪ কোটি ৫৩ লাখ ৯৪ হাজার ১০৫ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই কাজ পায়। কাজ গত বছরের ২৫ মার্চ শুরু হয়ে চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত বছর জুন মাসে ওয়ার্কঅর্ডার পেয়ে নভেম্বর মাসে কিছু অংশের কাজের মেগাডাম করে ফেলে রাখে। কাজের মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদার কাজ শেষ করতে পারেনি।

এদিকে কাজের শুরুতেই ঠিকাদার নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ শুরু করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে জানালেও তারা কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। ইতিমধ্যে উপজেলা প্রকৌশলী অফিস কাজের এক কিস্তির বিল ছাড় করেছে।

স্থানীয় অটো, মোটরসাইকেল চালকসহ অনেকে জানান, গত বছরের শেষদিকে মূল সড়কের দুই পাশ খুঁড়ে সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়। সড়কের দুই পাশ খুঁড়ে দীর্ঘদিন ফেলে রাখে তারা। কয়েক মাস পর খোয়া-বালু দিয়ে গর্ত ভরাট করে। এখন আবার জায়গায় জায়গায় ট্রাক্টর দিয়ে মূল সড়ক চাষ দিয়েছে। সেখানে গর্ত হয়ে আছে। যা এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্থানীয় একাধিক রাজনৈতিক নেতারা বলেন, এলজিইডি কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে সড়কের কাজের ধীরগতি। তাই জনসাধারণের ভোগান্তির শেষ নেই। আমরা দ্রুতই সড়কের কাজ বাস্তবায়ন দেখতে চাই।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি বশিল উদ্দিন বলেন, এতে প্রকৌশলীদের কোনও অবহেলা নেই। আমাদের বিভিন্ন সময়ে চিঠি দিয়ে যাচ্ছে কাজ করার জন্য। শুরুর দিকে স্থানীয়ভাবে কিছু মেগাডাম দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো একটু খারাপ ছিল। পরে পটুয়াখালী থেকে ভাল মেগাডাম নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সরকার পতনের জন্যও আমাদের কাজের কিছুটা ধীরগতি।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এখানে আমাদের কোনও অবহেলা নেই। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলার কারণে এই কাজের ধীরগতি হয়েছে। ঠিকাদার কাজের শুরুর দিকে নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে কাজ করেছেন। এই কাজের জন্য বেশ কয়েকবার ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা বলেন, আমার কাছে ঐ সড়ক নিয়ে একাধিক অভিযোগ এসেছে। ওখানে দুইজন শিক্ষার্থী দুর্ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে বরিশাল। আমি এ বিষয়ে জেলা মিটিংয়ে বার বার বলেছি। দপ্তরের মাধ্যমে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হবে, যেন কাজ দ্রুত করে। নয়তো তাদের লাইসেন্স বাতিলের জন্য বলা হবে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত