প্রেমের টানে এক নারীর বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে আটকের পর বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার খাদ্যগুদামের (এলএসডি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে আদমদীঘি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোলাম রব্বানী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাজশাহী বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের একটি আদেশের মাধ্যমে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
অফিস আদেশ সূত্রে জানা গেছে, ইউসুফ আলী কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে যান। সেখানে তিনি একটি নারীঘটিত ঘটনায় জড়িয়ে পড়লে জনগণ তাকে আটক করে। যা অসদাচরণ ও পলায়নের শামিল। ইউসুফ আলীকে সরকারি কর্মচারী বিধিমোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের সান্তাহার গ্রামের এক নারীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয় হয় সান্তাহার এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলীর। দীর্ঘ চার বছর ধরে চলে তাদের সম্পর্ক। বাড়ি ও অফিসে যাতায়াত ছিল দুজনেরই। গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে ওই নারীর বাড়িতে বেড়াতে যান ইউসুফ আলী।
এরপর বিয়ের জন্য ওই নারী জোর করলে রাজি হননি ইউসুফ আলী। তখন প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তাকে আটকে দেন ওই নারী। ঘটনাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে ওই বাড়িতে মানুষের ভিড় জমে। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তখন উৎসুক জনতা জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতায় তাদের থানায় নিতে চাইলে স্থানীয়রা বাধা দেন।
গত বুধবার বিষয়টি আবারও সমাধানের চেষ্টা করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। একপর্যায়ে ১১ লাখ টাকার বিনিময়ে সমাধান করতে চাইলেও আপস করেননি ওই নারী। স্থানীয় মাতব্বররা আবারও পুলিশ ডাকেন। পরে ওই দিন রাত ১০টায় খাদ্য কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার বিষয়ে সান্তাহার খাদ্যগুদামের (এলএসডি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, ওই নারীর সাথে পরিচয়ের পর থেকে বিভিন্নভাবে সমস্যা সৃষ্টি করতে থাকে। পরে আমি তার পরিবারের সঙ্গে আলাপ করতে ক্ষেতলাল গিয়েছিলাম। সেখানে বিয়ের জন্য ওই নারী জোর করে।
আদমদীঘি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোলাম রব্বানী বলেন, সান্তাহার এলএসডির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইউসুফ আলী পাবনার মুলাডুলি সিএসডিতে বদলি আদেশাধীন ছিলেন। এরই মধ্যে নারীঘটিত কারণে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় বিধি মোতাবেক রাজশাহী বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাইন উদ্দিন স্বাক্ষরিত একটি আদেশের মাধ্যমে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
