ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ভোটের দাবিতে তরুণ সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে বিভাগীয় পর্যায়ে তারুণ্যের সমাবেশ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপির তিন অঙ্গ সংগঠন—জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। আগামী ৯ মে চট্টগ্রাম বিভাগ দিয়ে শুরু হবে এই কর্মসূচি।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দেশব্যাপী তারুণ্যের সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অভূতপূর্ব ও জনসম্পৃক্ত নির্দেশনায় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে দেশের ১০টি সাংগঠনিক বিভাগকে চারটি বৃহত্তর ভাগে বিভক্ত করে এ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
তিনি বলেন, তরুণদের ক্ষমতায়ন, রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ, সৃজনশীলতার বিকাশ এবং তৃণমূল পর্যায়ে সার্বজনীন উন্নয়নের বাস্তবসম্মত মডেল গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রতিটি বিভাগে দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত হবে। প্রথম দিনে অনুষ্ঠিত হবে একটি সেমিনার, যার শিরোনাম ‘তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ভাবনা, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ।’ এই সেমিনারে রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে গণতন্ত্রকামী সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার তরুণ প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, উদীয়মান চিন্তাবিদ, তরুণ বক্তা ও উদ্যোক্তারা অংশ নেবেন। আলোচনায় উঠে আসবে কর্মসংস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবেশ, নগরায়ণ, প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক অধিকারসহ তারুণ্যের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে একটি আধুনিক, মানবিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ নির্মাণের ভাবনা।
আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, এই প্ল্যাটফর্ম হবে একটি উন্মুক্ত ও যুক্তিনির্ভর সংলাপের ক্ষেত্র, যেখানে মতবিনিময় হবে গঠনমূলক, পর্যালোচনামূলক ও ভবিষ্যৎমুখী। সংলাপের ভিত্তি হবে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলসমূহ ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রদত্ত দিকনির্দেশনা ও রাজনৈতিক দর্শন।
তিনি আরও বলেন, কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে, যার মাধ্যমে প্রাণবন্ত, উদ্দীপনাময় পরিবেশে তরুণদের সরব উপস্থিতি তথা ঐক্য, প্রত্যয় ও আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো হবে।
তিনি জানান, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে যেন আর কখনো কোনো ফ্যাসিবাদের উত্থান না ঘটে, ফ্যাসিবাদের ১৬ বছরের মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং জুলাই-আগস্টের গণহত্যার দ্রুত বিচার নিশ্চিত হয় এবং সার্বভৌম বাংলাদেশে গণমানুষের স্বাধীনচেতা আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন ঘটে—সেই লক্ষ্যেই এই কর্মসূচি।
একই সঙ্গে তিনি চারটি বৃহত্তর ভাগে আয়োজিত কর্মসূচির সময়সূচি ও বিষয়বস্তু প্রকাশ করেন। সূচি অনুযায়ী:
- ৯ মে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় কর্মসংস্থান ও বহুমাত্রিক শিল্পায়ন বিষয়ে তারুণ্যের ভাবনা নিয়ে সেমিনার এবং ১০ মে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
- ১৬ মে খুলনা ও বরিশালে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার বিষয়ে তারুণ্যের ভাবনা শীর্ষক সেমিনার এবং ১৭ মে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সমাবেশ হবে।
- ২৩ মে রাজশাহী ও রংপুরে কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা ও নাগরিক সমস্যা নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা শীর্ষক সেমিনার এবং ২৪ মে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ হবে।
- ২৭ মে ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহে তারুণ্যের রাজনৈতিক ভাবনা ও অর্থনৈতিক মুক্তি বিষয়ে সেমিনার এবং ২৮ মে তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
আব্দুল মোনায়েম মুন্না বলেন, এসব কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের মতামত ও চিন্তাভাবনা সংগ্রহ করা হবে। যার ভিত্তিতে রাজনৈতিক ও সামাজিক নীতিগুলো আরও জনকল্যাণমুখী ও মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পরিমার্জিত করা হবে। তরুণদের একাগ্রতা, সম্পৃক্ততা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়াকে আরও জনমুখী ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।