ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি পুরোনো শ্মশানকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ প্রেসক্লাবে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উচাখিলা শ্মশানকে ঘিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে কিছু উগ্র সংখ্যক ব্যক্তিদের মিথ্যাচার, অসৎ উদ্দেশ্যে ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ইত্তেফাকুল উলামা ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা আবুল ফজলের স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইসলামি আন্দোলনের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মুফতি হাবিবুল্লাহ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ইত্তেফাকুল উলামা ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুফতি মাহমুদুল হক আযীযী, উপদেষ্টা হাফেজ আহমাদ আলী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুফতি মানসুর বিন আহমাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ওবায়দুল হক।
হাবিবুল্লাহ লিখিত বক্তব্যে বলেন, বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস ধর্মীয় সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কিন্তু সম্প্রতি উচাখিলা ইউনিয়নের একটি শ্মশান নিয়ে কিছু উগ্র ব্যক্তি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা গত ২৭ এপ্রিল ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রধান সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধনের নামে যানজট সৃষ্টি করে এবং রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স চলাচলেও বাধা সৃষ্টি করে। এসময় তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদুল আহমেদের পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন উস্কানিমূলক স্লোগান দেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, মানববন্ধনে শ্মশান ভাঙচুর, উচ্ছেদ ও অপসারণের অভিযোগ আনা হলেও প্রকৃতপক্ষে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে ঈশ্বরগঞ্জের উলামায়ে কেরাম, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং এলাকাবাসী সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের কোনো সত্যতা পাননি। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরাও ভাঙচুর বা উচ্ছেদের কোনো অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করেন।
বক্তারা জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্মশানের ক্ষতিগ্রস্ত পিলার সংস্কার এবং মন্দিরের উন্নয়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে এরপরও কিছু উগ্রচিন্তাধারার ব্যক্তিরা ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার লক্ষ্যে বিভ্রান্তিমূলক কর্মসূচি পালন করছে। সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবি উত্থাপন করা হয়- ১. ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ। ২. মিথ্যাচার ও সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান। ৩. আগামী ২৯ এপ্রিল উপজেলা পরিষদ চত্বরে বৃহত্তর গণসমাবেশের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন।