দিনটি পুরোপুরি বাংলাদেশের হতে পারতো। প্রথম বলেই জিম্বাবুয়েকে গুটিয়ে দিয়ে ব্যাটিংয়ে নামার পর উদ্বোধনী জুটিতে শতরান। চার বছর পর সাদমানের সেঞ্চুরি। কিন্তু শেষ সেশনে ৫ উইকেট হারিয়ে লিডটা বড় করার স্বপ্ন কিছুটা ফিকেই হয়ে থাকলো। বোর্ডে ৭ উইকেট ২৯১ রান আর ৬৪ রানের লিড নিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ।
১ উইকেট হাতে থাকা জিম্বাবুয়ে ২২৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল। কিন্তু তাদের ইনিংস স্থায়ী হয় মাত্র এক বল। দিনের প্রথম বলেই তাইজুল ইসলাম ফিরিয়ে দেন ব্লেসিং মুজারাবানিকে। এরই সঙ্গে ২২৭ রানে অলআউট হয়ে যায় সফরকারীরা। প্রথম ইনিংসে ৬০ রানে ৬ উইকেট শিকার করেন তাইজুল ইসলাম। টেস্ট ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকায় ৪৯ উইকেট নিয়ে ওয়াসিম আকরামের পর চামিন্দা ভাসকেও ছাড়িয়ে যান তাইজুল। তার উপরে আছেন ওয়াকার ইউনিস (৬২) ও মুত্তিয়া মুরালিধরন (৮৭)।
এর পর দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম আর এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটে ২৬ ওভারেই ১০৫ রান তুলে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। ১২ ইনিংস পর বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি পেরোয় পঞ্চাশের গণ্ডি। আর ২৮ মাস ও ৩২ ইনিংস পর তিন অংক ছোঁয় বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। তবে দুর্ভাগ্য সঙ্গী করেই সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার। সেই দুর্ভাগ্যের নাম ‘আম্পায়ার্স কল’। ২০২২ সালের জুনে সবশেষ টেস্ট খেলা বিজয় প্রায় তিন বছর পর একাদশে সুযোগ পেয়ে এলবিডব্লিউ হন ৮০ বলে ৩৯ রানে। রিভিউতে দেখা যায় ইমপ্যাক্ট ছিল আম্পায়ার্স কল। তাতে ভাঙে ১১৮ রানের উদ্বোধনী জুটি।
তিনে নেমে মুমিনুল হক খেলেন ৬৪ বলে ৩৩ রানের ইনিংস, জুটি গড়েন ৭৬ রানের। এর মাঝে ফর্মহীনতায় সমালোচকদের নিশানায় থাকা সাদমান সেঞ্চুরির দেখা পান ২৬ ইনিংস পর। এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ২০২১ সালের জুলাইয়ে হারারেতে করেছিলেন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। গত বছর রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে আউট হয়েছিলেন ৯৩ রানে। চার মেরে ১৪২ বলে তিন অংক স্পর্শ করেন সাদমান, পেরিয়ে যান হাজার রানের মাইলফলক। চা বিরতির তিন ওভার আগে বাধে বিপত্তি। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বেন কারেনের ক্যাচে পরিণত হন মুমিনুল। পরের ওভারে ব্রায়ান বেনেটের প্রথম বলেই লেগ বিফোর হন সাদমান। এ যাত্রায় রিভিউতে ধরা পরে উইকেট হিটিং ছিল আম্পায়ার্স কল। ১৮১ বলের ইনিংসে ১৬ চার ও ১ ছ্ক্কায় ১২০ রান করেন সাদমান। এর আগে ক্যারিয়ারে কখনো ১২টির বেশি চার এক ইনিংসে মারেননি তিনি।
শেষ সেশনে মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল শান্তর জুটিতে চতুর্থ উইকেটে আসে ৬৫ রান। এ পর্যন্ত দিনটি ছিল বাংলাদেশের। শেষ সেশনে এর পরেই ব্যাটিং ধসের আলামত শুরু হয়। ২৫৯ রানে শান্ত ফেরেন নিজের ২৩ রানে। এর ২০ রানের মধ্যে একে একে সাজঘরে ফেরেন জাকের আলী, মুশফিকুর রহিম ও নাঈম হাসান। এর মধ্যে নিজের ভুলে রানআউট হন মুশফিকুর রহিম। ফেরার আগে ৫৯ বল খেলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ রান করেন মুশফিক। জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত স্পিনার ভিনসেন্ট মাসেকেসা শিকার ধরেন তিনটি। দিন শেষে মিরাজ ১৬ ও তাইজুল ৫ রানে অপরাজিত আছেন ক্রিজে।