কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গরু ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি চোখে পড়ার মতো। জানা গেছে, সড়ক পথের চেয়ে নদীপথে কোরবানির গরু পরিবহনে ব্যবসায়ীরা বেশী নিরাপদ বোধ করে থাকেন। কারণ হিসেবে তারা জানান, সড়ক পথের চেয়ে নদীপথে পরিবহণ ব্যয় কম ও অধিক নিরাপদ। এছাড়া নৌ পথে চাঁদাবাজি অনেক কম। তবে এবার নৌপথে চাঁদাবাজি ও নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত গরু ব্যবসায়ীরা।
জামিরতা বাজারের গরু ব্যবসায়ী মুন্সী আবুল কালাম আজাদ জানান, যমুনা ও পদ্মা নদী পথে আরিচা, তালতলা ঘাট হয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন কোরবানির পশুর হাটে বেপারীরা গরু ছাগল নিয়ে যায়।
গরু ব্যবসায়ীরা জানান, এ নৌপথে বিভিন্ন স্থানে কোরবানির আগে অস্থায়ী গরু ছাগলের হাট বসায় তাদেরকে এসকল পশুর হাটে জোর করে গরু ছাগল বিক্রির জন্য বাধ্য করা হয়। এ কারণে তাদের অধিকাংশ সময় লোকসান গুনতে হয়।এছাড়া ঢাকা নারায়নগঞ্জ নৌপথে নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ ও চাঁদাবাজি যাতে না হয় এজন্য তারা অনুরোধ জানান।
জানা গেছে, যমুনা চর অঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘাস উৎপাদন হওয়ায় কোরবানির সময় গবাদি পশু লালন পালনে খামারীরা ঝুঁকে পড়ে। প্রাকৃতিক উপায়ে চরাঞ্চলে গরু-ছাগল লালন পালন করায় সারা দেশে এ অঞ্চলের গবাদি পশুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসার বিল্লাল হোসেন জানান, শাহজাদপুরে কোরবানি ঈদ উপলক্ষে ৮৯ হাজার পশু লালন পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮ হাজার গরু রয়েছে। বাকী ৫১ হাজার ছাগল ও ভেড়া। ৩৮ হাজার গরুর মধ্যে ৮ হাজার গরু শাহজাদপুর উপজেলার যমুনার চরাঞ্চলে মোটাতাজা করেছে স্থানীয় ছোট বড় খামারীরা।
গরু ব্যবসায়ী মুন্সী আবুল কালাম আজাদ জানান, মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী, জামিরতা, কাশিপুর, বেনটিয়া ও বাঘাবাড়ী ঘাট থেকে ঢাকা-নারায়নগঞ্জের পশুর হাটে গরু ছাগল পাঠানো শুরু হবে। তবে এটি পুরোদমে শুরু হবে ২৬ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত।
নৌপথের নিরাপত্তা নিয়ে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম আলী বলেন, ‘শাহজাদপুরের যে সকল ঘাট থেকে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন হাটে নৌকায় কোরবানির পশু নিয়ে যাওয়া হবে সেসব ঘাটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জান জানান, কোরবানির গরু ব্যবসয়ীরা যাতে নিবিঘ্নে পশু নিয়ে ঢাকায় যেতে পারে সেজন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে। নৌপথে নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য অন্যান্য উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অবহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।