মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

নাহিদ ইসলাম বললেন

আ. লীগকে নিষিদ্ধ করতে না পারা আমাদের সামষ্টিক ব্যর্থতা

আপডেট : ০২ মে ২০২৫, ০৭:২৬ পিএম

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও দলটির বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর এই সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার জোর দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার অধিকার আর বাংলার মাটিতে নেই। গণহত্যার কারণে আওয়ামী লীগের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা জুলাই ঘোষণা পত্রের কথা বলেছিলাম। আমরা জুলাইকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলেছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কারণে সেই জুলাই ঘোষণাপত্রের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ৯ মাস আমাদের আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন করতে হচ্ছে, এটা আমাদের সামষ্টিক ব্যর্থতা। জাতির কাছে আমাদের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল বিগত ফ্যাসিবাদী আমলের বিচার নিশ্চিত করা এবং দেশের সংস্কার করা।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত করেছে। তারা ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে নিরাপদ আলেম সমাজের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। একইভাবে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং সর্বশেষ জুলাইয়ে ছাত্রজনতার আন্দোলনে হামলা, গুলি ও গণহত্যা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কোনও রাজনৈতিক দল নয়। এটি একটি ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী সংগঠন। গণহত্যার বিচার চলাকালীন তাদের  নিবন্ধন বাতিল করে সাংগঠনিক ও রাজনৈতি কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।

এতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। গুম খুনের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ এবং অন্য অঙ্গ সংগঠনগুলো- যারা গুম খুনের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিচার করতে হবে। বিচার নিশ্চিত ছাড়া আওয়ামী লীগের এই বাংলাদেশের নির্বাচনে অংশগ্রহণ হবে না। বাংলাদেশের মানুষ এটা নিশ্চিত করবে।

সমাবেশে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে টালবাহানা চলছে, এটা লজ্জাজনক। আমাদের হাইকোর্ট নয়, জনগণের রায়ই শেষ কথা। জনগণের দেওয়া রায় অনুযায়ী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা না দেখিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন বলেন, এই বাংলার মাটিতে আওয়ামী লীগ আর কখনো রাজনীতি করতে পারবে না।

আরেক নেতা আশরাফ উদ্দীন মাহাদী বলেন, খুনি হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করতে হবে। মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের চেষ্টা হলে তা শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হবে।

সমাবেশে ‘এই মুহূর্তে দরকার, বিচার আর সংস্কার’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর’, ‘ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’- এমন নানা স্লোগানে গুলিস্তান এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

সভায় আরো বক্তব্য দেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন, যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দীন মাহাদী, যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মুজাহিদ, যুগ্ম সদস্যসচিব হুমায়রা নূর, যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার, যুগ্ম সদস্যসচিব তাহসীন রিয়াজ, সংগঠক রফিকুল ইসলাম আইনী, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আলী নাছের খান, সংগঠক মোস্তাক আহমেদ শিশির, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাইফুল্লাহ হায়দার প্রমুখ।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত