বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

আবাহনীকে ম্লান করে বসুন্ধরার বদলা

আপডেট : ০২ মে ২০২৫, ০৮:১৭ পিএম

ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের সামর্থ্য নিয়ে এই মৌসুমে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। জাতীয় দলের ফরোয়ার্ডের বাজে ফর্ম নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। ধীরে ধীরে নিজ ক্লাব বসুন্ধরা কিংসেও অনিয়মিত হয়ে পড়েছিলেন। তবে নিজেকে ফিরে পেতে ফাহিম বেঁছে নিলেন নিজের পুরোনো ক্লাব আবাহনীকে। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় করলেন জোড়া গোল। তাতে লিগ শিরোপা জয়ের পথে আবাহনী খেয়েছে বড়সড় ধাক্কা। আর দুই ম্যাচ জয়বঞ্চিত থাকা বসুন্ধরা কিংস আবাহনীর সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে এনেছে অনেকটাই। পাশাপাশি দুই দিনের ব্যবধানে দুইবার আবাহনীকে হারিয়ে মৌসুমের শুরুর দুই হারের বদলা নিয়েছে বসুন্ধরা।

কয়েক মৌসুম ধরেই দুই দলের মাঠের লড়াইটা কেবল মাঠেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। মেজাজ হারানোর ঘটনা ঘটেছে বারবার। শুক্রবারও এর অন্যথা হয়নি। অথচ এই ম্যাচের ফলে সবচেয়ে বেশি লাভ হয়েছে কুমিল্লায় পুলিশ এফসিকে হারানো মোহামেডানের। এতদিন তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছিল চিরশত্রু আবাহনী। এই রাউন্ডের আগে শীর্ষে থাকা মোহামেডানের সঙ্গে আবাহনীর ব্যবধান ছিল চার পয়েন্টের। এই রা্উন্ড শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত পয়েন্টে। আর বসুন্ধরার সঙ্গে মোহামেডানের ব্যবধান থেকে গেছে ১০ পয়েন্টই।

এমন দুর্ধর্ষ রূপে অনেকদিন দেখা যায়নি বসুন্ধরাকে। দুই দিন আগে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে টাইব্রেকারে পাওয়া জয়টাই যেন তাতিয়ে দিয়েছিল ছয়বারের লিগজয়ীদের। নিজেদের আঙিনায় শুক্রবার সেই্ ফাইনালের প্রতিপক্ষ আবাহনীকে পেয়ে রীতিমত ছেলে খেলা করেছে। যার নেতৃত্ব দিয়েছেন দুই মৌসুম আগে আবাহনী ছেড়ে আসা ফাহিম। ১৬ মিনিটে ফাহিম, জোনাথন ফার্নান্দেজ ও রাকিবের দারুণ বোঝাপড়ায় এগিয়ে যায় বসুন্ধরা। জোনাথনের থ্রু পাস আলতো টোকায় রাকিবকে পাঠান ফাহিম। রাকিবও ছোট্ট করে বল বাড়ান। ছোট জায়গা পেয়ে ডান পায়ের বাকানো শটে মিতুলকে পরাস্ত করেন ফাহিম।

২৬ মিনিটে সতীর্থের ক্রসে সুমন রেজার হেড অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে গেলে সমতায় ফেরার ভালো সুযোগ নষ্ট হয় আবাহনীর। ৪৯ মিনিটে পুরানো ক্লাবের বিপক্ষে ফের লক্ষ্যভেদ করেন ফাহিম। রাকিব দ্রুত প্রতি আক্রমণে উঠে অসাধারণ সেট আপ দেন ফাহিমকে। বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে মিতুল মারমাকে পরাস্ত করেন তিনি। 

যোগ করা সময়ে মেহেদী হাসান শ্রাবণের ভুলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি আবাহনীর বদলী ফরোয়ার্ড আকাশ। বক্সের ওপর থেকে এনামুল গাজীর হেড লুফতে পারেননি ঠিকঠাক। পোস্টে লেগে বল চলে যায় আকাশের কাছে। তবে এই বদলি ফরোয়ার্ড হাতছোঁয়া দূরত্ব থেকে আবাহনীর ব্যবধান কমানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন।

ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে অফ দ্য বল সংঘর্ষে জড়িয়ে লালকার্ড দেখতে হয় দুই দলের তিন খেলোয়াড়কে। আর শেষ বাঁশি বাজার পর দুই ডাগআউটে ঘটে হাতাহাতির ঘটনা। আবাহনীর খেলোয়াড়দের সঙ্গে বসুন্ধরা কিংসের অফিসিয়ালদের সঙ্গে লেগে যায় সংঘর্ষ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনাই হয়ে পড়েছিল দুঃসাধ্য। পরে পুলিশ দুই পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বসুন্ধরার হয়ে লালকার্ড দেখেন দুই অভিজ্ঞ সোহেল রানা ও সাদ উদ্দিন। আর আবাহনীর হয়ে মাঠ ছেড়ে যেতে হয় শাহীনকে। আর শেষ বাঁশি বাজার পর দুই দলের মধ্যে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষে ফুটবলের আসল সৌন্দর্যটা ম্লান হয়েছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত