বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে একাডেমিক ও প্রশাসনিক শাটডাউনে অচল অবস্থা দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বিভাগের পরীক্ষা চললেও ক্লাস করতে দেখা যায়নি। এদিকে প্রশাসনিক শাটডাউন থাকায় কর্মকর্তাদের এদিক সেদিক ঘুরাফেরা করতে দেখা গেছে। এমতাবস্থায়, শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম সেশনজটসহ মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে টানা ২৯ দিন ধরে চলমান আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে আগামীকাল (মঙ্গলবার) দক্ষিণবঙ্গ অচলের ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তাদের এ কার্যক্রমের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের একাংশ৷ এর আগে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছে শিক্ষকরাও।
সোমবার (১২ মে) বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রান্ডফ্লোরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবস্থান কর্মসূচি শেষে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। এসময় তারা ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা প্রদক্ষিণ করে পুনরায় গ্রাউন্ড ফ্লোরে এসে শেষ করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ২৫টি বিভাগের বেশিরভাগ ক্লাসরুমই শূন্য। কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছেন। তবে বিভাগের সামনে শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখা যায় নি। তবে লাইব্রেরির রিডিং রুম ও মেডিকেল সেবা এবং পরিবহন সেবা সচল থাকতে দেখা গেছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আজ ২৮ তম দিনে এসে ব্লকেড কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি। আমরা রাষ্ট্রপক্ষকে বারবার জানিয়েছি তারা আমাদের দিকে তারা কোনো নজর দিচ্ছেন না। এখন তারা যদি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চাই তাহলে আমাদের কিছু করার নাই। আমরা স্পষ্টভাবে বরে দিতে চাই আগামীকাল দুপুর ১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত সময় বেধে দিচ্ছি। যদি উপাচার্য শূচিতা শরমিনকে সরানো না হয়। তবে আমরা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেবো।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় বিশ্বাস সুভ এ বিষয়ে বলেন, আমাদের যৌক্তিক আন্দোলনকে মেনে নিয়ে উপাচার্য সরিয়ে দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়ে ছিলাম কিন্তু তারা আমাদের কথার কোনো কর্ণপাত করেননি। আগামীকাল ২টার মধ্যে যদি উপাচার্য পদত্যাগ না করেন। তাহলে আমরা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি।
এ বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, আন্দোলনের ২৮ তম দিনে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারীরা একসঙ্গে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা আগামীকাল থেকে ব্লকেড কর্মসূচিতে যাচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক মুস্তাকিম বিল্লাহ বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি।
কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী কেউই ভালো নেই। এই ফ্যাসিস্ট মনোভাবের স্বৈরাচারী ভিসিকে যদি থাকে তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংস হয়ে যাবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষার স্বার্থে আমরা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলন একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের পাশে আছি।