নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তারে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা এবং পুলিশ সদস্যদের আহত করার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাতে সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রিপন মৃধা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি রুজু করা হয় থানার মামলা নম্বর-৯ হিসেবে। এজাহারে নাম উল্লেখ করে ৫২ জনকে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামিদের পরিচয় প্রকাশ করেনি।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) তারেক আল মেহেদী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, গতকাল সন্ধ্যায় মামলা দায়ের হয়েছে। জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় পাঁচটি হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে। এরমধ্যে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায়, পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা থাকায় গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে বাধার সম্মুখীন হয়।
আইভীর সমর্থকদের বাধার মুখে ওই রাতে পুলিশ তার বাসায় প্রবেশ করলেও সেখানে তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) হাসিনুজ্জামান, ওসি নাসির উদ্দিন আহমেদ এবং ওসি শাহিনুর আলমসহ পুলিশের কয়েকজন সদস্য। তারা রাত সাড়ে ১১টা থেকে পরদিন ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ওই বাসায় অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক স্লোগান দেন এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। পরবর্তীতে আইভীকে গ্রেপ্তার করে নেওয়ার সময় শহরের উকিলপাড়া মোড়ে পুলিশের ওপর হামলা হয়। এতে পুলিশের একাধিক সদস্য আহত হন। বর্তমানে তারা চিকিৎসা শেষে সুস্থ রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ মে ভোরে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকার চুনকা কুটির বাসা থেকে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই দিন সকাল ১০টায় তাকে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনউদ্দিন কাদিরের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে সোমবার (১২ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে ডা. আইভীর জামিন ও ডিভিশন চেয়ে আবেদন করেন কয়েকজন আইনজীবী। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলেও কারাবিধি অনুযায়ী ডিভিশন মঞ্জুর করেন।