সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ জন প্রধান শিক্ষককে দশম গ্রেডে উন্নীত করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় অনুসারে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার ফলে সরকারের বাড়তি ব্যয় দাঁড়াবে ২২ লাখ ৯৭ হাজার ১৪০ টাকা।
সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রেবেকা সুলতানার সই করা একটি চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে—২০১৮ সালে প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত ৪৫ জন শিক্ষক ১০ম গ্রেড দাবিতে হাইকোর্টে রিট (নং-৩২১৪/২০১৮) দায়ের করেন। আদালত রিটকারীদের পক্ষে রায় দিলে, সরকার আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (নং-৩৫৬৪/২০১৯) করে। পরে দাখিল করা হয় সিভিল রিভিউ পিটিশন (নং-১২৪/২০২২)। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ২৪ এপ্রিল আপিল বিভাগ চূড়ান্ত রায় দেন।
রায়ে বলা হয়, রিটকারীরা ৪, ৮ ও ১২ বছর পূর্ণ হলে টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেডের সুবিধা পাবেন না। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের সুবিধা চালু হলে, তারাও তার আওতায় পড়বেন। এই রায় অনুযায়ীই মন্ত্রণালয় ৪৫ জন রিটকারী প্রধান শিক্ষকের জন্য ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়।
মন্ত্রণালয়ের হিসেবে দেখা গেছে, ১২তম গ্রেডে থাকা ১ জন শিক্ষককে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করতে অতিরিক্ত ব্যয় হবে ৮৯ হাজার ১৮০ টাকা। ১১তম গ্রেডে থাকা ৩৪ জনকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করতে খরচ হবে ২২ লাখ ৭৯ হাজার ৯৬০ টাকা। এ ছাড়া, ৮ম গ্রেডে থাকা ২ জন আপাতত আর্থিকভাবে উপকৃত না হলেও ভবিষ্যতে তাদের উচ্চ গ্রেড নির্ধারিত হলে বকেয়াসহ নিয়মিত বেতনের জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন হবে। সব মিলিয়ে মোট অতিরিক্ত ব্যয় হবে ২২ লাখ ৯৭ হাজার ১৪০ টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধু এই ৪৫ জন শিক্ষকের জন্য নয়, বরং দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬৫ হাজার ৫২৪ জন প্রধান শিক্ষককে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করলে সরকারের বার্ষিক ব্যয় বাড়বে প্রায় ৩২১ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮০ টাকা।
এই পরিস্থিতিতে, সংশ্লিষ্ট ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের ১০ম গ্রেড কার্যকর করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে, দেশের সকল প্রধান শিক্ষকের ক্ষেত্রেও একই গ্রেড বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।