মেজাজ হারিয়ে ম্যাচ কমিশনারকে ধাক্কা দেওয়ায় বড় খেসারত দিতে হচ্ছে বসুন্ধরা কিংসের লেফটব্যাক সাদউদ্দিনকে। বাফুফের শৃঙ্খলা কমিটি বুধবার রাতের সভায় তাকে ছয় ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছে। এর মধ্যেই এক ম্যাচে শাস্তি ভোগ করেছেন জাতীয় দলের এই ফুটবলার। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে আগামী মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচটি খেলার সুযোগ পাবেন না সাদ। শৃঙ্খলা কমিটি শাস্তি দিয়েছে তার ক্লাবের হোম ভেন্যু বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনাকেও। ছয় ম্যাচ দর্শকশূন্য অবস্থায় আয়োজন করতে হবে তাদের। তবে এটা স্থগিত শাস্তি। ভবিষ্যতে হাঙ্গামার ঘটনা ঘটলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই শাস্তি নেমে আসবে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনার ওপর।
বেশ কিছু অঘটনের ইস্যু নিয়ে বুধবার সভায় বসেছিল শৃঙ্খলা কমিটি। যদিও আগের মতো এবারও বাফুফে এ কমিটির সিদ্ধান্ত জানাতে গড়িমসি করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাফুফে লিখিত সিদ্ধান্ত প্রকাশ করেনি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কমিটির এক সদস্যও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি অবশ্য সভার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো জানিয়েছেন। সাদউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল আবাহনীর বিপক্ষে লিগ ম্যাচ শেষ হওয়ার পরপরই দায়িত্বরত ম্যাচ কমিশনারের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়া এবং এক পর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে তার ওপর চড়াও হওয়ার। সেই ম্যাচের শেষ মুহূর্তে আবাহনীর এক ফুটবলারের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে লালকার্ড দেখেছিলেন সাদউদ্দিন। তার জন্য আগেই তাকে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়। শৃঙ্খলা কমিটি আগের সভায় সিদ্ধান্ত দিয়েছিল তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়ার। তার ব্যাপারে নতুন সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত খেলা থেকে বিরত রাখার কথা বলা হয়েছিল। সাদ তার ব্যাখ্যায় নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেন এবং বলেন মেজাজ হারিয়ে তিনি এই কাজ করে ফেলেছেন। তাই এ ধরণের ঘটনায় আইন অনুযায়ী সর্বনিম্ন যে শাস্তি হওয়ার কথা, সেটা হয়েছে। তাকে ছয় ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফলে বসুন্ধরার হয়ে চলতি লিগের আর কোন ম্যাচ খেলতে পারবেন না তিনি। একই সঙ্গে আগামী লিগেও প্রথম ম্যাচ মিস করবেন সাদ।
সভায় বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হতে গিয়েও অবশ্য পারেননি কমিটির সদস্যরা। কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার সূত্রে বলেন, 'বসুন্ধরা কিংসের মালিক বসুন্ধরা গ্রুপ দেশের ফুটবলে দীর্ঘদিন ধরে বড় ভূমিকা রেখে আসছে। তারা বিভিন্ন লিগের পৃষ্ঠপোষক। তাছাড়া বাফুফে নানা কারণে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা ব্যবহার করে। সব দিক বিবেচনা করে তাদের ছয় ম্যাচ দর্শকশূন্য অবস্থায় আয়োজনের স্থগিত শাস্তি দেওয়া হয়েছে।'
শৃঙ্খলা কমিটি বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে সিটি ক্লাব ও বাফুফে এলিট অ্যাকাডেমির ম্যাচে ঘটা রেফারিকে মারধরের ঘটনার প্রেক্ষিতে নিয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। সিটি ক্লাবের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে নানা শাস্তি। কাউকে ছয় ম্যাচ, কাউকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ছয় মাস। দলের কয়েকজন ফুটবলার, কোচ ও স্টাফদেরও নানারকম শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে বলে জানা গেছে বিভিন্ন সূত্রে।