প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দ্বেইবাহর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছে লিবিয়ার হাজার হাজার তরুণ। বিক্ষোভকারীরা দেশটির রাজধানী ত্রিপোলির শহীদ স্কয়ারে জড়ো হয়ে ‘জাতীয় সরকারের পতন চাই’ এবং ‘আমরা নির্বাচন চাই’ বলে স্লোগান দেয়।
লিবিয়ার সরকার জানিয়েছে, কিছু বিক্ষোভকারী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ঢুকে পড়ার চেষ্টাকালে নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন৷ পরে তারা মিছিল করে শহরের কেন্দ্রস্থলের দিকে যান।
এসময় বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের আগ পর্যন্ত আমরা এখান থেকে যাব না।’ বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে শুক্রবার অন্তত তিনজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন- অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-হাউইজ, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বদর উদ্দিন আল-তামি এবং গৃহায়নমন্ত্রী আবু বকর আল-ঘাভি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বহু দলে বিভক্ত দেশটির জাতীয় ঐক্যের সরকারের নেতৃত্ব দেওয়া দ্বেইবাহ ২০২১ সালে জাতিসংঘ সমর্থিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন। প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর মতবিরোধের কারণে নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হয়ে এখনো ক্ষমতায় রয়েছেন।
কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র লড়াইয়ে চলতি সপ্তাহে রাজধানীতে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংঘর্ষের পরে দ্বেইবাহকে পদত্যাগের দাবি জোরালো হয়েছে। এতে আট বেসামরিক নাগরিক নিহত হয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে বিলুপ্ত করার নির্দেশ দেওয়ার পর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা দ্বেইবাহকে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হওয়া এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ন্যাটো সমর্থিত অভ্যুত্থানে দীর্ঘদিনের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে লিবিয়ায় খুব একটা স্থিতিশীলতা আসেনি। ২০১৪ সালে দেশটি প্রতিদ্বন্দ্বী পূর্ব ও পশ্চিমা দলগুলোর মধ্যে বিভক্ত হয়ে যায়, যদিও ২০২০ সালে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে বড় ধরনের গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা থেমে যায়।
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে এক দশক ধরে কমান্ডার খলিফা হাফতার ও তার লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির আধিপত্য থাকলেও ত্রিপোলি ও পশ্চিম লিবিয়ার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে অসংখ্য সশস্ত্র গোষ্ঠী।