বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিষ্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার(২২ মে) বেলা আড়াইটার দিকে বরগুনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বিচারক মো. মনিরুজ্জামান এ আদেশ দেন। এর আগে বুধবার (২১ মে) বিকালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বরগুনায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বরগুনা কারাগারে নিয়ে আসা হয়।
বেলা আড়াইটার দিকে বরগুনা জেলা কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে কড়া নিরাপত্তায় অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। শম্ভুকে আদালতে তোলার খবর ছড়িয়ে পড়লে আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হন স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মী ও বিএনপি পন্থী আইনজীবিরা। এসময় তারা শম্ভুর বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিতে থাকেন, শম্ভুর আস্তানা বরগুনায় হবে না বলে আওয়াজ তোলেন তারা। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ কর্মীরা শম্ভুকে লক্ষ্য করে ডিম ছুড়ে মারেন, এতে আদালত প্রাঙ্গণে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পরে ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর পক্ষে জামিন আবেদন করা হলে আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে বরগুনা জেলা কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর দীর্ঘদিন গাঢাকা দিয়ে থাকার পর ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা থেকে মহানগর গোয়েন্দা শাখার একটি টিম গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে নিউমার্কেট থানার আন্দোলন চলাকালে নিহত ব্যবসায়ী ওয়াদুদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ ছাড়াও আশুলিয়া থানার অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত ৩০ এপ্রিল বরগুনায় ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর, সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এবং হাতবোমা ফাটিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করায় বরগুনা সদর থানায় মামলা দায়ের হয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ ১৫৮ জনের বিরুদ্ধে। বরগুনা জেলা বিএনপির প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক এসএম নজরুল ইসলামের ছেলে এসএম নইমুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করে।
বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটার অ্যাড. নুরুল আমিন বলেন, ‘বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শম্ভুর নেতৃত্বে ১৭ মার্চ ২০২৩ সালে বিএনপি অফিসে ভাঙচুর চালানো হয়। এসময় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমনা ও বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ছবি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সেই সময় পরিস্থিতি অনকূলে না থাকায় মামলা করা যায়নি। ৫ আগস্ট পরবর্তিতে সেই ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিষ্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হলে তাকে এক নম্বর আসামী করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনার সাথে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বরগুনায় নিয়ে আসা হয়। আদালতে নিয়ে আসলে তার পক্ষে জামিন আবেদন করলে আদালত উভয়পক্ষের শুনানী শেষে তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।’