রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোকলোর বিভাগের নাম সংস্কার করাসহ তিন দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনে ফোকলোর বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। বিকেল সাড়ে ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত ছিল।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো- ফোকলোর বিভাগের নাম পরিবর্ধন বা সংস্কার করতে হবে। যাতে বিষয়টির স্বীকৃতি ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়; পিএসসি ও ইউজিসিতে ফোকলোর বিষয়ের নাম সংযুক্ত করে কোড প্রদান নিশ্চিত করতে বিভাগীয় উদ্যোগ নিতে হবে এবং পরীক্ষার ফলাফল ১ মাসের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে এবং নির্ধারিত সময়ে ক্লাস রুটিন প্রকাশ করতে হবে।
অনশন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন ও স্লোগান দিচ্ছেন। এর মধ্যে আছে ‘এই মুহুর্তে দরকার, ফোকলোর বিভাগ সংস্কার’, ‘আমাদের দাবি-আমাদের দাবি, মানতে হবে-মানতে হবে’, ‘সিন্ডিকেট না মুকি, মুক্তি মুক্তি’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ইত্যাদি।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ফোকলোর বিভাগের যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে তারা তিন দফা দাবি জানিয়েছিলেন। শিক্ষকেরা দাবি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করার বদলে বিভিন্ন ছলচাতুরী করছেন। এজন্য তারা আজ অনশনে বসেছেন। দাবি মানা না পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন।
বিভাগের শিক্ষার্থী আল শাহরিয়ার শুভ বলেন, ‘ফোকলোর একটি বহুমাত্রিক বিষয়ভিত্তিক বিভাগ। যেখানে আমরা শুধুমাত্র লোককাহিনী বা গান-নৃত্য নয়, বরং সমাজ, উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি ও সংস্কৃতির সমন্বিত পাঠ গ্রহণ করে থাকি। আমাদের পাঠ্যক্রমটি আধুনিক, প্রাসঙ্গিক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের চাহিদা পূরণে সক্ষম। তবে অনেকেই বিভাগের পরিধি ও গুরুত্ব বুঝতে পারে না। অনেকেই মনে করে এটি শুধু পুরনো গান, নাচ বা লোকগল্পের পড়াশোনা, যা বাস্তব জীবনের কাজে লাগবে না। চাকরিক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীরা হীনমন্যতায় ভোগেন। শুধুমাত্র এই নামের কারণে আমরা পিছিয়ে পড়ছি’
বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী নিলয় দে সরকার বলেন, ‘বিভাগের শিক্ষকরা বলছেন আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে। কিন্তু কবে আমাদের আন্দোলনের ফলাফল পাব সে বিষয়ে আমরা নিশ্চিত নই। আমরা কালক্ষেপণ নয় দ্রুত অফিশিয়াল সিদ্ধান্ত চাই। আমরা আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে তাদের দাবিগুলো উত্থাপন করেছিল। আমরা সেগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গত ২০ মে একটি উপ-কমিটি গঠন করেছি। সেই কমিটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি প্রস্তাবনা পেশ করবে। ইতোমধ্যে সেই কমিটি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে আলোচনা করেছে। তাদের দাবিগুলোর সঙ্গে আমরাও একমত। তবুও তারা আজ কেন আন্দোলন করছে, বুঝতে পারছি না। শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে, দাবিগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মেনে নিতে হবে। কিন্তু সেটি তো সম্ভব না।’