বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

১৭ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ পেল নাসিরনগরের মানুষ

আপডেট : ২২ মে ২০২৫, ০৭:০৯ পিএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার অন্তত ১৩০টি গ্রাম টানা ১৭ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎহীনের পর সন্ধ্যা সৌয়া ৬টায় বিদ্যুৎ পেলেন।

বুধবার (২১ মে) দিবাগত রাত থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উপজেলার পুরো এলাকাই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। তবে সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে এবং বাকী এলাকায় পর্যায়ক্রমে চালু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) প্রকৌশলী মো. আমজাদ হোসেন। ১৭ঘন্টা বিদ্যুৎবিহীন থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সরকারী, বেসরকারি অফিস, বৃদ্ধ ও শিশু, শিক্ষার্থী, দোকানি ও সাধারণ মানুষ। 

বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে খবর নিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানই খোলা থাকলেও ফ্রিজ, এসি, সেলাই মেশিন কিংবা মোবাইল রিচার্জ কোনো সেবাই চালু নেই। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এভাবে দিনের পর দিন বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলতে থাকলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে যাবে।

চাতলপাড় ইউনিয়নের ব্যবসায়ী হরিমন বলেন, দোকানের ফ্রিজে থাকা ১০ হাজার টাকা মূল্যের আইসক্রিম সব নষ্ট হয়ে গেছে। 

ভলাকুট ইউনিয়নে বাসিন্ধা শামীম মিয়া বলেন, সারাদিনে ২ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাইনা। এর মধ্যে ১২ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন।  বাড়ির ফ্রিজে থাকা সব কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। 

হরিপুর গ্রামের সাদিয়া আক্তার বলেন, আজ আমার অনলাইন ক্লাস ছিল। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল চার্জ দিতে পারিনি। বাসায় গরম, আলো নেই, ফ্যান চলে না—কীভাবে পড়াশোনা করব? 

নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় চিকিৎসা সরঞ্জাম চালাতে সমস্যা হচ্ছে। জরুরি রোগীদের অক্সিজেন কিংবা শিশু ওয়ার্ডে গরমে রোগীর কষ্ট বেড়েছে। বিদ্যুৎ অফিস বলছে, যান্ত্রিক ত্রুটি।

চাতলপার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম দেশ রূপান্তরকে বলেন, গতকাল থেকে বিদ্যুৎ নেই সকাল ১০টায় এসে ১২টায় চলে যায় সন্ধ্যা ৬টা বাজলেও বিদ্যুৎ নাই। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় জনজীবনে অনেক সমস্যা হচ্ছে। 

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) প্রকৌশলী মো. আমজাদ হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দেশ রূপান্তরকে বলেন, বুধবার দিবাগত রাতের দিকে নাসিরনগর ফিডারে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। আমাদের টেকনিক্যাল টিম রাতেই কাজ শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় বিদ্যুৎ অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ চালু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকীগুলো চালু হয়ে যাবে বলে তিনি জানান। যেহেতু এলাকাটি বিস্তীর্ণ, এজন্য সময় একটু বেশি লেগেছে বলে তিনি স্বীকার করেন।

তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, আগাম কোনো ঘোষণা ছাড়াই প্রায়ই বিদ্যুৎ চলে যায় এবং একবার গেলে দীর্ঘসময় ফিরে আসে না।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত