শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

সাকিব-রিশাদদের পিএসএল ফাইনাল আজ

আপডেট : ২৫ মে ২০২৫, ০৭:৫১ পিএম

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে শঙ্কা জেগেছিল, হয়তো থেমে যাবে এ মৌসুমের পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)। তবে পরিস্থিতি উন্নতির ফলে ফের শুরু হয় দেশটির সবচেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টটি। কপাল খোলে দুই বাংলাদেশি তারকারও। আর দেখতে দেখতে এটি এসে ঠেকেছে মাত্র এক ম্যাচে। আজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে পিএসএল ফাইনালে কোয়েটা গ্ল্যাডিয়েটর্সের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের ক্রিকেটভক্তদের সমর্থন প্রাপ্ত দল লাহোর কালান্দার্স। যেখানে খেলছেন সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ ও রিশাদ হোসেন।

ক্রিকেটে একটা দলের খেলোয়াড়রা যখন আনন্দে থাকেন, তাদের দলীয় শক্তি আরও বেড়ে যায়। এই লাহোর কালান্দার্স- এমনটি একটি দল। গত এক দশকের ওঠানামা, ধারাবাহিকতার অভাবের মধ্যেও এই দলের চালিকাশক্তি ছিল একটি সহজ দর্শন—ক্রিকেট কেবল একটি খেলা এবং এটি উপভোগ করার জন্যই। এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে জন্ম নেওয়া এক ধরনের নির্ভার স্বাধীনতা তারা ছড়িয়ে দিয়েছে, যা আর কোনো দল তেমনভাবে পারেনি। কালান্দার্সদের সবচেয়ে বড় সাফল্যও এখানেই। তারা এমন একটি ক্রিকেট দল গড়ে তুলেছে, যা শহরের প্রাণ ও পরিচয়কে ধারণ করে।

রিশাদের ৩ উইকেট শিকারের কৃতিত্বেই দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ইসলামাবাদকে ৯৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে নাম লিখিয়েছে লাহোর। মিরাজ অবশ্য একাদশে ছিলেন না। আর সাকিব থাকলেও ছিলেন নিষ্প্রভ। তবে শেষ পরীক্ষা আজই দিতে হবে এ তিন তারকার। কেননা নৈপুণ্যে এবারের সফলতম দল সৌদ শাকিলের নেতৃত্বে কোয়েটা।

গ্ল্যাডিয়েটরসদের যাত্রাপথ প্রায় লাহোর কালান্দার্সের বিপরীত প্রতিচ্ছবি। যেখানে কালান্দার্স প্রতি মৌসুমে পয়েন্ট টেবিলের নিচে অবস্থান করত, সেখানে গ্ল্যাডিয়েটররা প্রথম চারটির মধ্যে তিনটি ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছিল। ২০১৯ সালের শিরোপা জয় এক নতুন যুগের সূচনার ইঙ্গিত দিলেও, এরপর দলটি যেন দিক হারিয়ে ফেলে। পরবর্তী পাঁচ মৌসুম তারা কার্যত লক্ষ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ায় এবং এর মধ্যে চারবারই প্লে-অফে উঠতে ব্যর্থ হয়। এই পতনের সময়টুকু যেন সেই প্রতাপশালী শুরুর ছায়াও বহন করতে পারেনি, গ্ল্যাডিয়েটরদের গল্পটি হয়ে ওঠে হারিয়ে ফেলা পথের এক রূঢ় বাস্তবতা।

তবে সেসব ইতিহাস পেছনে ঝেড়ে এ মৌসুমে অনবদ্য কোয়েটা। লিগে সর্বোচ্চ ১৫ পয়েন্ট ছিল তাদের। বড় দুই বিদেশি শক্তি ফিন অ্যালেন ও রাইলি রুশোর সঙ্গে নিজেদের মেলে ধরেছেন দিনেশ চান্ডিমাল ও আভিষকা ফার্নানদো। অধিনায়ক শাকিলতো আছেনই, কোয়েটার আরও বড় ভরসার নাম মোহাম্মদ আমির, ফাহিম আশরাফ ও আবরার আহমেদরা আছেন উড়ন্ত ফর্মে। ফাইনালে উঠতে জিতে এসেছেন টানা ৭ ম্যাচ।

দুদলের ১৮ বারের দেখায় জয়ের হারও সমান সমান ৯। আজকের ফাইনালে কালান্দার্সদের জয়ই লাহোরের দর্শকরা জোরালোভাবে দাবি করছে। কিন্তু পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য এই দীর্ঘ, বিষণ্ণ বছরে একটাই স্থায়ী সত্য ছিল- আপনি যা চান, তা খুব কমই মেলে। ৬ বছর পর ফাইনালে ওঠা কোয়েটার মতো লাহোরেরও চোখ তৃতীয় পিএসএল শিরোপায়।

 

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত