ইরানের সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অধিকৃত ফিলিস্তিনের মধ্যাঞ্চলীয় রেহোভোটে অবস্থিত ইসরায়েলের গবেষণা কেন্দ্র ‘ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সে’ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর গবেষণা কেন্দ্রটি প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের কর্মীরা।
জানা গেছে, ইসরায়েলের এ রিসার্চ ইনস্টিটিউটটি বৈজ্ঞানিক ও চিকিৎসার অগ্রগতিতে কাজ করে। গবেষণা কেন্দ্রটির অধ্যাপক অ্যাডা ইয়োনাথ রাইবোসোম ম্যাপিংয়ের জন্য ২০০৯ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার জিতেছিলেন।
কেন্দ্রটিতে জীববিজ্ঞান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং আণবিক জীববিজ্ঞানের মতো উন্নত বিষয়েও গবেষণা করা হয়। এছাড়া এ অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলির আগ্রাসনে ব্যবহৃত নজরদারি ও যুদ্ধে ব্যবহৃত সরঞ্জামও গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল।
সংবাদপত্র দ্য মার্কার প্রতিবেদন অনুসারে, ইরানের মিসাইল ইনস্টিটিউটের বেশ কয়েকটি ভবনে সরাসরি আঘাত হেনেছে, একটি মূল পরীক্ষাগার কমপ্লেক্স আগুনে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে বিমানের অভ্যন্তর পুড়ে যাওয়া, ল্যাবের মেঝে ধসে পড়া, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা ধ্বংস এবং কাঠামোগত ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র দেখা গেছে। গণমাধ্যমের খবরে এই হামলাকে ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানীদের হত্যার প্রতিশোধ হিসেবেও উল্লেখ করেছে।
কেন্দ্রের দুই বিজ্ঞানী, এরান সেগাল ও এলদাদ তাহোর বিধ্বস ছবি শেয়ার করে এক্স-এ বলেন, তাদের ল্যাবটি ধ্বংস হয়ে গেছে।
আরেক ইসরায়েলি গবেষক অধ্যাপক ওরেন শুলডিনার দ্য মার্কারকে বলেন, ‘মনে হচ্ছে ল্যাবটি বাষ্পীভূত হয়ে বাতাসে মিলিয়ে গেছে।’ শুলডিনার জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষাগারগুলো পুনর্গঠন করতে কমপক্ষে দুই বছর সময় লাগবে।
সেন্টারের গ্রাফিক ডিজাইনার মোর মোরিয়া শিপনি বার্তা সংস্থা সিএনএনকে বলেন, ল্যাবগুলো ‘পুরোপুরি ছাই হয়ে গেছে’।
তিনি বলেন, ‘আমার সহকর্মীরা বছরের পর বছর ধরে গবেষণা চালিয়েছিল এবং তাদের কাছে লাখ লাখ ডলারের সরঞ্জামও ছিল— এখন সব ধ্বংস হয়ে গেল।’
তিনি জানান, গবেষণা কেন্দ্রটির সবাই আপাতত আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ঘটনার সময় কেউই সেখানে ছিলেন না। মোরিয়া শিপনি বলেন, ‘সৌভাগ্যক্রমে কেবল সম্পদের ক্ষতি হয়েছে, আমাদের খুবই ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’
ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ আজ হামলার স্থান পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি বলেন, ‘ইরান ধ্বংসযজ্ঞ, মৃত্যু এবং ধ্বংসের চেষ্টা করবে। আমরা জীবন, স্বাধীনতা, নাগরিক স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও শান্তির প্রচার চালিয়ে যাব— যা আমরা বিশ্বাস করি।