জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার কিংবা আহত যোদ্ধা পরিচয়ে কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তিকর কাগজপত্র জমা দিয়ে সরকারি সুবিধা নিতে চান, তবে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে—এমনটাই বলা হয়েছে নতুন অধ্যাদেশে।
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সরকারের পক্ষ থেকে জারি করা হয়। এতে বলা হয়েছে, এই ধরনের প্রতারণামূলক কাজের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড, দুই লাখ টাকা জরিমানা কিংবা নেয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
অধ্যাদেশটির দ্বিতীয় অধ্যায়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদফতর গঠনের কথা বলা হয়েছে, যেখানে দফতরের কাঠামো, দায়িত্ব ও কর্মীসংক্রান্ত নানা বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অপরদিকে, চতুর্থ অধ্যায়ে অপরাধ ও বিচার সংক্রান্ত বিস্তারিত নিয়মাবলি তুলে ধরা হয়েছে।
ওই অধ্যায়ে বলা হয়েছে, কেউ যদি জানামতে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিজেকে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত ব্যক্তি দাবি করে ভুয়া বা বিকৃত তথ্য দেয় কিংবা বিভ্রান্তিকর নথি পেশ করে চিকিৎসা, অর্থ বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি বা গ্রহণ করেন, তবে তা এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এ ধরনের অপরাধের জন্য শাস্তি হিসেবে রাখা হয়েছে সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড কিংবা প্রাপ্ত সুবিধা বা অর্থ সহায়তার দ্বিগুণ অর্থদণ্ড। এই অপরাধ জামিনযোগ্য হলেও তা অ-আমলযোগ্য হিসেবে গণ্য হবে। অভিযোগ দায়ের থেকে শুরু করে তদন্ত, বিচার ও আপিলসহ সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ায় ‘দণ্ডবিধি কার্যবিধি, ১৮৯৮’-এর সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো অনুসরণ করা হবে।
অধ্যাদেশে আন্দোলনে প্রাণ হারানো ও আহত ব্যক্তিদের শ্রেণিবিন্যাস করে বলা হয়েছে, নিহতদের ‘জুলাই শহীদ’ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। আহতদের আবার তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে—অতি গুরুতর আহত, গুরুতর আহত এবং সাধারণ আহত।
শহীদ পরিবার ও আহতদের কল্যাণে সরকারের যেসব উদ্যোগ ইতোমধ্যে রয়েছে, এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে তা আইনি ভিত্তি পেয়েছে।