জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলায় সমবায় সমিতির আমানতের টাকা ফেরত পেতে উপজেলা পরিষদ ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছেন গ্রাহকেরা। সোমবার (২৩ জুন) সকাল ১০ টার দিকে মাদারগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গ্রাহকরা সমবেত হয়। বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
মাদারগঞ্জে বিভিন্ন সমবায় সমিতিতে আমানতকৃত অর্থ উদ্ধারের জন্য সহায়ক কমিটির ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সহায়ক কমিটির নেতারা প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন।
এ সময় উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। আবার অনেকেই নিরাপত্তার কথা ভেবে অফিসে তালা দিয়ে চলে যান।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, লাভের আশায় ২৩টি সমবায় সমিতিতে টাকা জমা করেছিলেন প্রায় ৩৫ হাজার গ্রাহক। প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকেরা ২০২২ সালের শেষের দিকে আত্মগোপনে চলে যান। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় কয়েক গুণ বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়েছিলেন তারা। জামালপুর থেকে এক থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা তারা আত্মসাৎ করেছেন। আমানতের টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে আজ সকাল ১০ টার দিকে মাদারগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জোড়ো হয়। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে গিয়ে এ অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করেন গ্রাহকরা। বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। সমবায় সমিতির মালিকেরা আত্মগোপনে যাওয়ার পর তারা মাদারগঞ্জ থানা ও জামালপুরের আদালতে একাধিক মামলা করেছেন। বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে তারা এ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেন। টাকা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন তারা।
জেলা সমবায় কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গ্রাহকের ৭৩০ কোটি টাকা সমিতিগুলোর কাছে ছিল। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৩টি সমিতির মধ্যে আল আকাবা, শতদল, স্বদেশ, নবদীপ, হলিটার্গেট ও রংধুন অন্যতম। ছয়টি সমিতির কাছে জমা আছে ৭০০ কোটি টাকার বেশি। শুধু মাদারগঞ্জের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের একটি হিসাব করে দেখা গেছে, প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা সমিতিগুলোয় আছে। এ ছাড়া ইসলামপুর, মেলান্দহ, সরিষাবাড়ী ও জামালপুর সদরের কয়েক হাজার গ্রাহক আছেন।
২৩টি সমিতির মধ্যে আল আকাবা বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি হুমায়ুন আহম্মেদসহ বেশ কয়েকটি সমিতির সভাপতি ও পরিচালক দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে আছেন। তাদের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে বন্ধ পাওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে কথা বলতে মাদারগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাদির শাহর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায় নি।