হেডিংলি যেন পরিণত হয়েছে রানতাড়ার স্বর্গে। ৬ বছর আগে এই মাঠে ৩৬২ রান তাড়া দারুণ এক জয় পেয়েছিল ইংল্যান্ড অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। তার চেয়ে ৯ রান বেশি টার্গেট দিয়েছিল এবার ভারত। বেন ডাকেটের ঝড়ো ১৪৯ রানের ইনিংস আর জো রুটের অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরিতে স্টোকসের দল জয় তুলে নিয়েছে ৫ উইকেটে।
টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৮ বছরের ইতিহাসে যা কখনও হয়নি, সেই লজ্জার মুখে পড়তে হল ভারতকে। কখনও কোনও দল একটি টেস্টে পাঁচটি ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির পরে সেই ম্যাচটা হেরে যায়নি। সেই কলঙ্ক লাগলো ভারতের কপালে।
মূলত দুই ইনিংসে দুবার ধস (৭ উইকেটে ৪১ ও ৬ উইকেটে ৩১ রান) এবং ফিল্ডিংয়ের ছয়টি সহজ ক্যাচ মিস—এই দুটি ফ্যাক্টর ব্যর্থতার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
আগের দিনের ২১ রান নিয়ে আরো ৩৫০ রানের মঙ্গলবার পঞ্চম দিন সকালে খেলতে নামেন ডাকেট ও ক্রলি। দুজন গড়েন ১৮৮ রানের জুটি, যা ভাঙে ক্রলির উইকেট হারানোর পর। ডাকেট ১৪৯ রান করেন মাত্র ১৫৮ বলে, যেখানে ছিল ১৯টি চার ও ২টি ছয়। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল রিভার্স সুইপ, কভার ড্রাইভ আর স্কয়ার কাটে পরিপূর্ণ।
সিরাজের বলে ৯৭ রানে থাকা ডাকেটের সহজ ক্যাচ ফেলেন যশস্বী জয়সওয়াল, যেটি ছিল ম্যাচে তার তৃতীয় মিস। বোলিং পরিবর্তনে দ্বিধা, এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বুমরা ও সিরাজকে না আনা—ক্যাপ্টেন শুভমান গিলের সিদ্ধান্ত নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
বুমরাহল প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ছিলেন নিষ্প্রভ। ৪২.২ ওভারে ডাকেট-ক্রলির জুটি আর শেষ দিকে রুট-স্মিথের ৭১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি ভারতের সব সম্ভাবনাকে নিভিয়ে দেয়।
ডাকেট আউট হওয়ার পর পরই শার্দুল ঠাকুর ফেরান হ্যারি ব্রুককে। ক্যাপ্টেন বেন স্টোকস এসে হ্যাটট্রিক বল সামাল দিলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। কিন্তু এরপর জো রুট ও জেমি স্মিথ জয়ের কাজ শেষ করেন ১৪ ওভার হাতে রেখে। স্মিথ জাদেজার এক ওভারে ১৮ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে দেন।
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত স্কোর:
- ভারত: ৪৭১ (গিল ১৪৭, পান্ত ১৩৪, জয়সওয়াল ১০১) & ৩৬৪ (রাহুল ১৩৭, পান্ত ১১৮)
- ইংল্যান্ড: ৪৬৫ (পোপ ১০৬, ব্রুক ৯৯, ডাকেট ৬২, বুমরা ৫/৮৩) & ৩৭৩/৫ (ডাকেট ১৪৯, ক্রলি ৬৫, রুট ৫৩*)