জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট প্রজন্ম গড়তে মানবিক মূল্যবোধ, সৃজনশীলতা, আবিষ্কার মনস্কতা ও প্রগতি’ শীর্ষক কনফারেন্স শুরু হয়েছে। সম্মেলনে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে নবসৃষ্ট জ্ঞানকে সমাজ ও দেশের কল্যাণে কাজে লাগানোর তাগিদও দেয়া হয়েছে।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের তৃতীয় তলায় কনফান্সের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য এই কনফারেন্সে যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, ভারতসহ দেশের নানা জায়গা থেকে দেশবরেণ্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকরা অংশগ্রহণ করছেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কনফারেন্সের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে আমি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করার জন্য শিক্ষা, গবেষণা, উন্নয়নকে মোটো হিসেবে ঘোষণা করেছিলাম। যখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নিই তখন ইউজিসির র্যাংকিংয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৩৯। দুবছরে সেই ধাপের উন্নতি হয়েছে এবং সেটি এখন ১৪। এই উন্নয়নে গবেষণার ভূমিকা আছে। গবেষণা শুধুই ঘরে বসে করার বিষয় নয়। এটি অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগিও দরকার। ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স গবেষণার মান বৃদ্ধি ও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে স্কলারদের ভিউজ একচেঞ্জের জন্য দারুণ এক আয়োজন। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর কমপক্ষে একটি ইন্টারন্যাশানাল কনফারেন্সের আয়োজন করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে লক্ষ্যে এবার তৃতীয় বারের মতো আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজন করা হলো।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, আমরা চতুর্থ শিল্প বিল্পবের দিকে যাচ্ছি। এই শিল্প বিপ্লবের জন্য একদিকে যেমন প্রথাগত বিজ্ঞান চিন্তায় পরিবর্তন এসেছে তেমনি মানিবক মূল্যবোধ, সমাজিক বিজ্ঞান ও চারুকলা নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। উন্নয়নকে টেকসই করার পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সভ্যতা গড়ে তোলার দিকে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে।
সম্মেলনের অন্যতম মূল আকর্ষণ ও রীবন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. পবিত্র সরকার বলেন, কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যদি প্রান্তিক পর্যায়ে থাকে তবুও সেটা বিশ্ববিদ্যালয়। কেননা প্রান্তিক পর্যায়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবসৃষ্ট জ্ঞান দেশ, জাতি এমনকি বিশ্বের কল্যাণে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টির দিকে মনোযোগ দিতে হবে ও সেই জ্ঞানকে সারাবিশ্বের সাথে ভাগ করে নিতে হবে।
উদ্বোধনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুশাররাত শবনম, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার ও রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর। স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ড. জিল্লুর রহমান পল।
উদ্বোধনী অধিবেশনের পর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত প্যারালাল সেশনের মধ্যে দিয়ে গবেষকরা তাদের প্রবন্ধ উপস্থাপন শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালগুলো ও বিদেশ থেকে সর্বমোট ২৫০টি পেপার সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্য জমা পড়ে। তারমধ্যে ৯৯টি পেপার গৃহীত হয়েছে। ভারত ও সোমালিয়া থেকেই ১৭টি পেপার গৃহীত হয়েছে।