শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

মেয়র হিসেবে নিজের ব্যর্থতা নিয়ে যা বললেন আতিকুল

আপডেট : ১৩ মে ২০২৪, ০৫:৪৮ পিএম

মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের ৪ বছর পূর্তি প্রসঙ্গে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) নগরপিতা আতিকুল ইসলাম বলেছেন, এই চার বছরে দায়িত্ব পালনে আমার ব্যর্থতা রয়েছে। তবে, যারা তাকে ভোট দিয়ে আস্থা রেখেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। সবার গঠনমূলক সমালোচনাকে সাদরে গ্রহণ করে সমস্যা উৎরানোর পথ বের করার চেষ্টা করছি।

আজ সোমবার (১৩ মে) গুলশান নগরভবনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের ও কাউন্সিলরদের ৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, আমার প্রতি নগরবাসীর আস্থা-বিশ্বাসই আমার কাজের শক্তি। ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে শেষ পর্যন্ত কাজ করে যাব। আজ সব প্রাপ্তি নগরবাসীর; আর ব্যর্থতা সব আমার।

গত চার বছরে দায়িত্ব পালনে নিজের ব্যর্থতা সম্পর্কে মেয়র বলেন, ব্যর্থতা তো আছেই। আমাদের একটি আধুনিক পশু জবাইখানা করার কথা ছিল। এটি এখন পর্যন্ত করতে পারিনি। আর সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে যখন দেখি সবাই আমার চিন্তা করে, আমাদের চিন্তা করে না। এই আমার চিন্তা করে সব শেষ হয়ে গেছে। খাল যখন দেখি দূষণ হয়ে যাচ্ছে, তখন খারাপ লাগে। কিভাবে মানুষ বাথটাব, টেলিভিশন, ফ্রিজ, জাজিম খালের মধ্যে ফেলে দেয়? এতে তো জলাবদ্ধতা হবেই।

এ সময় খাল উদ্ধারে কলাগাছ থেরাপি কথা উল্লেখ করেন আতিকুল ইসলাম বলেন, আমার মনে শান্তি হচ্ছে না। বাড়ির বর্জ্য যেসব পাইপের মধ্য দিয়ে খালে ফেলা হয়, সেই প্রতিটি পাইপে কলাগাছ ঢুকাতে পারলে মনে শান্তি পেতাম। আমার ব্যর্থতা এখানে। কারণ, কীভাবে বারিধারা, গুলশানের লোকেরা খালের মধ্যে কালো বর্জ্য দিয়ে দিচ্ছে। এটি অত্যন্ত কষ্ট লাগে আমার।

এ সময় সাংবাদিকরা তার সফলতা সম্পর্কে জানতে চান। মেয়র আতিক বলেন, পরীক্ষা যে দেয় সে রেজাল্ট দেয় না। সুতরাং, আমরা পরীক্ষার মধ্যে আছি, আমরা পরীক্ষা দিয়েই যাচ্ছি। পরীক্ষার ফলাফল আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা দেবেন।

আগামী এক বছরের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি আগামী এক বছরে খালের দিকে ফোকাস দিতে চাই। এই খালগুলোকে পুনরুদ্ধারে আমি বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। আমি আমার কাউন্সিলরদের বলেছি, খালের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ কারওয়ান বাজারকে স্থানান্তর করা। এটি আমরা হাতে নিয়েছি, আশা করি এটিও আমরা সফলতার সঙ্গে করতে পারবো। আর ডিএনসিসির ১৮টি ওয়ার্ডকে আমাদের সাজাতে হবে এবং ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে চাই।

আতিকুল ইসলাম বলেন, সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে নগরবাসীকে দেওয়া সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আমি বদ্ধপরিকর। বাকি এক বছরে নতুন ১৮ ওয়ার্ডের উন্নয়নকাজ শেষ করা এবং খাল উদ্ধারে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাশাপাশি কারওয়ানবাজার হস্তান্তর ব্যাপারটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই কাজ করা হবে।

খালের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে সর্বশেষ পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। পিলার নির্ধারণের ক্ষেত্রে একেক খালের বেলায় ভিন্ন মাপে পিলার বসাতে গিয়ে কিছু জায়গার সমস্যা পড়তে হচ্ছে।  আমরা বসে নেই। এক হাজার ২০০টির মতো পিলার ইতিমধ্যে বসানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, সচিব (যুগ্ম সচিব) মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস চৌধুরী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত