সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের লবণাক্ত ও কাদা মাটিতে যেসব লবণ সহিষ্ণু উদ্ভিদ জন্মায় ও পাশাপাশি ঘনভাবে বেড়ে ওঠে বনভূমির সৃষ্টি করে তাকে ম্যানগ্রোভ বনভূমি বা বাদাবন বলে। বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও পৃথিবীর অনেক এলাকায়ই প্রাকৃতিকভাবে এ ধরনের বন গড়ে উঠেছে হাজার বছর আগে। কিন্তু এবার তেমন একটি বাদাবন সৃজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে মরু শহর দুবাইতে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরের ৭০ কিলোমিটার উপকূল জুড়ে বিশ্বের বৃহত্তম উপকূলীয় নগর সংস্কার প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। দেশটির পক্ষ থেকে ‘দুবাই ম্যানগ্রোভ’ নামের উদ্যোগের অধীনে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এর আওতায় উপকূলে বৃহৎ একটি ম্যানগ্রোভ বা লবণাক্ত জলাবন বা বাদাবন গড়ে তোলা হবে। সেখানে ১০ কোটির বেশি গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এই বনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠবে উপকূলীয় এলাকার পুরো বাস্তুসংস্থান।
সিএনএন বলছে, দুবাইয়ের উপকূল সংস্কারের এ উদ্যোগ নিয়েছে টেকসই শহর নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ইউআরবি। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, উপকূলে গাছ লাগানোর ফলে প্রতি বছর ১২ লাখ টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষিত হবে, যা সড়ক থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার গ্যাসচালিত গাড়ি বন্ধের সমান।
ইউআরবির প্রতিষ্ঠাতা ও নগর পরিকল্পনাবিদ বাহারাশ বাঘেরিয়ান বলেন, ম্যানগ্রোভ হলো উপকূলীয় ক্ষয় এবং সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রকৃতির নিজস্ব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। দুবাইয়ের মতো যেকোনো উপকূলীয় শহরের জন্য এটি বড় উদ্বেগের বিষয়।
বাঘেরিয়ান বলেন, বর্তমানে আমরা গবেষণা পর্যায়ে রয়েছি। প্রকল্প শুরুর জন্য প্রাথমিকভাবে ছয়টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব স্থানের সংস্কারের জন্য নকশা করা হচ্ছে। প্রকল্প ২০৪০ সাল নাগাদ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইউআরবির অন্য নকশাগুলো এখনো পরিকল্পনা পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০৪০ সালের মধ্যে এক হাজার কিলোমিটার সাইকেল চালানোর জন্য রাস্তা তৈরি ও দুবাই রিফ নামের ভাসমান দ্বীপ তৈরি।