নতুন শিক্ষাক্রমের শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষায় দুই বিষয়ে অকৃতকার্য বা ফেল করলেও কেউ চাইলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে। তবে ওই শিক্ষার্থীকে পরের দুই বছরের মধ্যে পাবলিক মূল্যায়নে অংশগ্রহণ করে বিষয়গুলোতে উত্তীর্ণ হতে হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তৈরি করা ‘জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২২-এর মূল্যায়ন কৌশল ও বাস্তবায়ন নির্দেশনা’-সংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার কারিকুলাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিভিশন কোর কমিটিতে প্রতিবেদনটি পাস হয়েছে। এখন এনসিটিবি বোর্ড সভা হয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির সভায় প্রতিবেদনটি চূড়ান্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, একাদশে ভর্তি হয়েও মান উন্নয়নের জন্য এক বা একাধিক অথবা সব বিষয়ে পুনরায় পাবলিক মূল্যায়নে (এসএসসি) অংশ নেওয়ার সুযোগ থাকছে। বর্তমানে একজন শিক্ষার্থী এসএসসিতে কোনো বিষয়ে ফেল করলে তার শুধু ফেল করা বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে; কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ নেই।
গত বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম, চলতি বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। ২০২৫ সালে পঞ্চম ও দশম, ২০২৬ সালে একাদশ এবং ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে এ শিক্ষাক্রম চালু হবে। নতুন শিক্ষাক্রমে দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে ২০২৬ সালে হবে এসএসসি পরীক্ষা। এরপর নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, যেকোনো কারণে একজন শিক্ষার্থী এক বা দুই বিষয়ে খারাপ ফল করতেই পারে। সেজন্য তার পরবর্তী স্তর আটকে থাকতে পারে না। কোর কমিটির এ সিদ্ধান্ত খুবই ভালো উদ্যোগ। এতে শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে যাবে না।
এদিকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আচরণগত বিষয়গুলোও মূল্যায়নের আওতায় আনা হবে। তার আচরণের নম্বর বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতা ও পারদর্শিতার নম্বরের সঙ্গে যোগ হবে। স্বাভাবিক মূল্যায়নের মতো আচরণের মূল্যায়নেও সাতটি স্তর বা সূচক থাকবে। রিপোর্ট কার্ডে আচরণিক ক্ষেত্র নামে আলাদা একটি ছক থাকবে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে এ মূল্যায়ন করবেন শিক্ষকরা।
‘আচরণ’ বলতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর আচরণ, দলগত কাজে অংশগ্রহণ, আগ্রহ, সহযোগিতামূলক মনোভাব ইত্যাদি বিষয়গুলো আমলে নেওয়া হবে। শিখন কার্যক্রম চলার সময় এ আচরণগুলো পর্যবেক্ষণ করবেন শিক্ষকরা। এরপর আচরণিক নির্দেশিকায় তা দেওয়া হবে।
নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীর অর্জন সাতটি স্কেল বা সূচকে মূল্যায়ন করা হবে। সাতটি স্কেলের জন্য থাকবে সাতটি ছক। সেগুলো হলো অনন্য, অর্জনমুখী, অগ্রগামী, সক্রিয়, অনুসন্ধানী, বিকাশমান ও প্রারম্ভিক। সর্বোচ্চ স্কেল ‘অনন্য’ বলতে বোঝানো হবে শিক্ষার্থী সব বিষয়ে পারদর্শিতার চূড়ান্ত স্তর অর্জন করেছে। আর ‘প্রারম্ভিক’ স্তর হলো সবচেয়ে নিচের স্তর।