বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের (বিএনএমসি) ডেপুটি রেজিস্ট্রার রাশিদা আক্তারের বিরুদ্ধে ভুয়া সিল বানিয়ে কাউন্সিলের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে।
রাশিদা নাম সর্বস্ব বেসরকারি নার্সিং কলেজের লাইসেন্স অনুমোদনের নামে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা ঘুষ নিতেন। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতনসহ চারটি মামলার তথ্য গোপন করে তাকে ডেপুটি রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব অভিযোগ অনুসন্ধান করছে।
দুদকের তথ্যমতে, ২০২২ সালে নার্সিং কাউন্সিলের ডেপুটি রেজিস্ট্রার রাশিদার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম অভিযোগটি অনুসন্ধান করছেন।
সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অনুসন্ধান কর্মকর্তা গত ৯ মে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক, বীমা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, ভূমি অফিস, সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) ও রেজিস্ট্রি অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে রাশিদা ও তার স্বামী সহিদুল ইসলামের রেকর্ডপত্র চেয়ে নোটিস পাঠান।
নোটিসে বলা হয়, রাশিদার নামে নারী ও শিশু নির্যাতনসহ চারটি মামলা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে তিনি নার্সিং কাউন্সিলের ডেপুটি রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ পান। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে রাশিদা ও তার স্বামী সহিদুলের নামে থাকা বাড়ি, গাড়ি, প্লট, ফ্ল্যাটসহ এ সংক্রান্ত তথ্য দরকার। তাদের নামে এ সংক্রান্ত তথ্য থাকলে তা ৩০ মে’র মধ্যে দুদকে পাঠাতে অনুরোধ জানানো হলো।
জানা গেছে, দুদকের নোটিস পাওয়ার পর কিছু তথ্য দুদকে পাঠানো হয়েছে। পুরো তথ্য পাওয়ার পরই তা পর্যালোচনা করে কমিশনে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করবেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। ওই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে কমিশন।
দুদকের কাছে থাকা অভিযোগে বলা হয়, ২০১৬ সালে রাশিদাকে নার্সিং কাউন্সিলের ডেপুটি রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেওয়া হয়, তখন তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনসহ চারটি মামলা ছিল। এসব মামলার তথ্য গোপন করে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন তিনি।
রাশিদা দায়িত্ব পালনকালে ভুয়া সিল বানিয়ে নার্সিং কাউন্সিলের ব্যাংক হিসাব থেকে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করেন। ইতোমধ্যে ২৭ লাখ টাকা আত্মসাতের তথ্য মিলেছে। এছাড়াও তার নিয়োগের পর চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। তাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা নাম সর্বস্ব বেসরকারি নার্সিং কলেজের লাইসেন্স অনুমোদনের জন্য লাখ লাখ টাকা আদায় করে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বিএনএমসির ডেপুটি রেজিস্ট্রার রাশিদার মোবাইলে কল দেওয়া হয়। এ সময় তিনি ‘ব্যস্ত আছেন’ জানিয়ে কল কেটে দেন।