ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের চাল নিতে আসা দুঃস্থ মহিলা ছবি রানী সরকারকে হাত তুলে তেড়ে মারতে যান সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পোরজনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাবু।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে পোরজনা ইউনিয়নের বাচড়া ঈদগাহ মাঠে ২য় দিনের চাল বিতরণের সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনেই এ ঘটনা ঘটেছে। ছবি রানী সরকার পোরজনা গ্রামের রমানাথ সরকারের স্ত্রী।
এ বিষয়ে ছবি রানী সরকার বলেন, তিনি খুব অসহায় গরিব হওয়ায় গত ঈদুল ফিতরের সময় বিভিন্ন জনের কাছে থেকে ভিজিএফ চালের ৫টি কার্ড সংগ্রহ করেন। সে সময় পোরজনা ইউপি চেয়ারম্যান বাবু চাল দেয় নাই। বলেছিল ঈদুল আজহার যখন চাল বিতরণ করা হবে তখন দেব। সেই আশায় কার্ড নিয়ে আমি দুইদিন ধরে চেয়ারম্যানের কাছে ঘুরছি। আজ আবার চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি আমাকে তেড়ে মারতে আসেন ও ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। বিষয়টি উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে যখন বলছিলাম তখন আবারও চেয়ারম্যান বাবু আমাকে মারতে আসেন ও বকাঝকা করেন। এছাড়া ঈদুল আজাহা উপলক্ষে চাল বিতরণের কার্ড চাইতে গেলেও চেয়ারম্যান আমাকে কোনো কার্ড দেয় নাই।
এছাড়া চরপোরজনা গ্রামের ছোরমান আলীর স্ত্রী আলেয়া খাতুন (৩৫), নন্দলালপুর গ্রামের সাহিদা খাতুন, চরপোরজনা গ্রামের আমেনা খাতুন অভিযোগ করেন, পোরজনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাবু চাল বিতরণের সময় তাদেরসহ অনেককেই ধাক্বা দিয়ে বের করে দিয়েছেন। এ সময় একজনকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। উপস্থিত জনতা মাথায় পানি ঢেলে তাকে সুস্থ করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
এছাড়াও নন্দলালপুর গ্রামের সাহিদা খাতুন জানান,পোরজনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাবু আমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার সময় চেয়ারম্যানের নির্দেশে এক মহিলা আনসার আমাকে চর থাপ্পর ও ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। এছাড়া অনেকে অভিযোগ করে বলেন দুই দিন ধরে চালের জন্য অপেক্ষা করার পরেও আমাদের চাল দেওয়া হয়নি। অথচ বস্তা পরিবর্তন করে আনসার সদস্যদের দিয়ে ভ্যানে করে বস্তা বস্তা চাল পাচার করা হয়েছে।
চাল নিতে আসা অনেকেই সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন ঈদুল ফিতরে আমাদের ভিজিএফের কার্ড বিতরণ করলেও শেষ পর্যন্ত চাল দেননি। চেয়ারম্যান বলেছেন, ঈদুল আজহার যখন চাল বিতরণ করি তখন দেব। আমরা দুইদিন হলো কাজ বাদ দিয়ে চালের জন্য ধর্ষা দিয়েও চাল পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে জারতে পোরজনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাবুর মোবাইল ফোনে বার বার কল করা দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, দুস্থ্যদের জন্যে বরাদ্ধের চাল নিতে আসা অসহায় মহিলাদের গায়ে হাত তোলা যাবে না। এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।