স্পেনের বিস্ময় বালক লামিন ইয়ামাল। বয়স সবে ষোলো তবে মাঠে তার নৈপুণ্য দেখে তা বোঝার বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। স্পেনের জার্সি গায়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই ইউরো ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলারের কীর্তি গড়েছিলেন ইয়ামাল। ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিতে তার যোলোকলা পূর্ণ করলেন সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হিসেবে নাম লিখিয়ে। সেটিও যেন-তেন ভাবে নয়। একেবারে জাদুকর লিওনেল মেসির মতো করে।
ইউরোতে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার কীর্তি ছিল সুইজারল্যান্ডের ইয়োহান ভনলানথেনের। ২০০৪ সালে ১৮ বছর ১৪১ দিন বয়সে করা তার গোলটিও ছিল ফ্রান্সের বিপক্ষেই। কাল রাতে ইয়ামালের বয়স ছিল ১৬ বছর ৩৬২ দিন। তাতে ফুটবল সম্রাট পেলেকেও ছাপিয়ে গেছেন। ইউরো কিংবা বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলা সবচেয়ে কমবয়সী ফুটবলার এখন তিনি। ১৯৫৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলার দিন পেলের বয়স ছিল ১৭ বছর ২৪৪ দিন।
পিছিয়ে থাকা স্পেনকে অসাধারণ নৈপুণ্যে সমতায় ফেরান ইয়ামাল। ২১তম মিনিটে ডিবক্সের বেশ বাইরে ইয়ামালের পায়ে যখন বল আসে ফরাসিদের পাঁচ প্রহরি। একটু নড়ে চড়ে নিজের ভারসাম্য সামলে নেওয়ার পর হাওয়ায় ভাসিয়ে শট নেন ইয়ামাল। বলটিও বাঁক খেয়ে পোস্টে লেগে খুঁজে নেয় তার কাঙ্খিত ঠিকানা। ইয়ামালের এ বাঁ পায়ের শটটি একেবারে মিলে যায় মেসির সঙ্গে।
আমি কেবল উপভোগ করছি এবং ফাইনালে উঠতে পেরে গর্বিত
-লামিন ইয়ামাল
চোখ জুড়ানো সেই গোল নিয়ে ম্যাচসেরা ইয়ামাল বলেন, ‘আমরা এক গোলে পিছিয়ে আছি, তখনই আমার পায়ে বল আসে। আমি অতকিছু ভাবিনি সেই সময় শুধু গোলে শট নেই।’ নিজের বয়স নিয়েও ভাবেন না ইয়ামাল, ‘এটা (১৬ বছর বয়স) নিয়ে বেশি কিছু ভাবছি না। আমি কেবল উপভোগ করছি এবং ফাইনালে উঠতে পেরে আমি গর্বিত।’
১৯৮৮ সালের পর এ ম্যাচেই স্পেনের হয়ে সবচেয়ে দূর থেকে ইউরোতে গোল করলেন ইয়ামাল। ২৬.৩ মিটার দূর থেকে শটটি নিয়েছিলেন তিনি। ১৫ বছর বয়সে ইউরোর অনূর্ধ্ব-১৭ সেমিফাইনালেও ফ্রান্সের বিপক্ষে বাম পায়ে এমন একটি গোল করেছিলেন ইয়ামাল। এবার করলেন মূল ইউরোর সেমিতে। তারপর এবারের ইউরোর পঞ্চম ফুটবলার হিসেবে তৃতীয় গোলের দেখা পান দানি ওলমো। তাতে ইউরো ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পঞ্চমবার শিরোপা মঞ্চে উঠে এলো স্পেন।