কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন সারাদেশে বন্ধ ট্রেন চলাচল। ট্রেন না চলায় পুরোদেশের মতোই যাত্রীশূন্য রয়েছে বগুড়ার সান্তাহার জংশন স্টেশনের প্লাটফর্মগুলো। তবে যাত্রী না থাকলেও এই স্টেশনের দুটি প্ল্যাটফর্মে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চালু রয়েছে বৈদ্যুতিক পাখা, যার ফলে অপচয় হচ্ছে বিদ্যুৎ।
জানা যায়, গত ১৯ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত ১১ দিন সকল যাত্রীবাহী ট্রেন বন্ধ রাখে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এ কারণে গত ১১ দিন ধরে সান্তাহার জংশন স্টেশনের প্লাটফর্মগুলো যাত্রীশূন্য। এতে ফাঁকা পড়ে রয়েছে স্টেশনের প্লাটফর্ম। তবে থেমে নেই যাত্রীদের আরাম দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত ফ্যানগুলো।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা, এমনকি দিনের পর দিনও ঘুরছে এসব ফ্যান। যদিও সরকারিভাবে নির্দেশনা দেওয়া আছে অযথা বিদ্যুৎ ব্যবহার না করার। কিন্তু সান্তাহার স্টেশনের দায়িত্বে নিয়োজিত সংশ্লিষ্টদের কোনো মাথাব্যথা নেই। যেন দেখার কেউ নেই, নেই কারও ভ্রুক্ষেপ। এ যেন সরকারি মাল, দরিয়ায় ঢাল!
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) রাত ৯ টার দিকে প্লাটফর্মে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশন কোনো যাত্রী নেই। তবে কেউ না থাকলেও ঘুরছে স্টেশনের ৩ ও ৪ নম্বর প্লাটফর্মে যাত্রীদের সুবিধার্থে লাগানো প্রায় ৩০টি ফ্যান। সেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পরও দায়িত্বরতদের কাউকে দেখা যায়নি।
স্থানীয়রা বলছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ট্রেন বন্ধের পর থেকেই সকাল-সন্ধ্যা অনবরত চালু থাকে এসব ফ্যান।
প্লাটফর্মে হাঁটতে আসা নাইম নামের এক যুবক বলেন, আমি প্রতিদিন সন্ধ্যার পর হাঁটার জন্য প্লাটফর্মে আসি। আবার বাড়ি যেতেও অনেক সময় এদিক দিয়ে যাই। কয়েকদিন ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলেও প্রায় দেখি ফ্যান ঘুরছে। এতে একদিকে যেমন অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে অযথা বিদ্যুৎ ব্যবহারে সরকারের বিলও উঠছে।
যাত্রীছাড়া স্টেশনে অনবরত ফ্যান চলার বিষয়ে শাহিনুর রহমান নামে স্টেশনে কর্মরত একজন বলেন, পুরো স্টেশনের বিদ্যুৎ সরবরাহের সুইচ স্টেশন মাস্টার অফিসে দেওয়া আছে। তাদেরই দেখভালের দায়িত্ব। হয়তো কেউ সুইচ দিয়ে চলে গেছে। এরপর আর কারও মনে নেই।
এ বিষয়ে সান্তাহার স্টেশন মাস্টার খাদিজা খাতুন বলেন, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ডিউটি করায় রাতে কিছু ফ্যান চালু থাকে। তবে সব ফ্যান চলে নাকি এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তদন্ত করে এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেব।
এদিকে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় সান্তাহার জংশনের দৈনিক প্রায় তিন লাখ টাকা আয় কমে গেছে। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সকাল থেকে স্বল্প দূরত্বের একটি ট্রেন চালু হয়েছে এই স্টেশন থেকে। তবে সকল ট্রেন কবে নাগাদ চালু হবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি বলে জানান স্টেশন মাস্টার।