জীবন বীমার টাকা তুলতে নিজের মতোই দেখতে এক ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ উঠেছে ভারতের কর্নাটকের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যবসায়ী মুনিস্বামী গৌড়া ও দেবেন্দ্র নায়ক নামে এক ট্রাকচালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন ব্যবসায়ীর স্ত্রীও। তিনি বর্তমানে পলাতক।
পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, অভিযুক্ত ওই ব্যবসায়ী আর্থিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই কারণে বীমা সংস্থার থেকে জীবন বীমার টাকা তুলতে নিজের মতো দেখতেই এক ভিক্ষুককে তিনি খুন করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত দম্পতি এক ভিক্ষুককে টোপ দিয়ে তাদের গাড়িতে তুলেছিলেন। এর পর গাড়ির টায়ার পাল্টানোর অছিলায় ভিক্ষুককে গাড়ি থেকে নামান এবং সুযোগ বুঝে একটি ট্রাকের সামনে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন। বিষয়টি যাতে দুর্ঘটনার মতোই মনে হয়, সেই কারণে ট্রাকচালক দেবেন্দ্রকেও নিজেদের পরিকল্পনায় সঙ্গে নিয়েছিলেন দম্পতি। ট্রাকের সামনে ধাক্কা মেরে ফেলা মাত্র, দেবেন্দ্র সেই ট্রাকটি দিয়ে ভিক্ষুককে পিষে দেন বলে অভিযোগ।
এর পর গত ১৩ আগস্ট ব্যবসায়ীর স্ত্রী হাসপাতালে গিয়ে দাবি করেন, ওই দেহটি তার স্বামীর। তিনি হাসপাতালে জানান, সম্ভবত গাড়ির টায়ার পাল্টানোর সময় দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। কারও মনে কোনো সন্দেহই জাগেনি তখন। এর পর নিহত ভিক্ষুকের দেহকে নিজের স্বামীর দেহ বলে দাবি করে তার শেষকৃত্যও সম্পন্ন করেন ব্যবসায়ীর স্ত্রী। বীমা সংস্থার কাছে স্বামীর জীবন বিমার টাকা চেয়ে আবেদন জানান। বিমার টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছিল।
রেললাইনে ঘুম, ট্রেন থামিয়ে ডেকে তুললেন চালক!সব কিছুই পরিকল্পনা মাফিকই চলছিল। শুধু একটিই ভুল করে বসেন অভিযুক্ত ব্যবসায়ী। তার ‘মিথ্যা শেষকৃত্য’ হয়ে যাওয়ার পর, দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। ওই আত্মীয় আবার পুলিশ সদস্য। একটি থানায় ইনস্পেক্টর পদে কর্মরত। বিষয়টি বুঝতে পেরেই যে থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছিল, সেই থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং গোটা বিষয়টি জানান। এর পর তদন্ত শুরু করে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশি জেরার মুখে তিনি অপরাধের কথা স্বীকার করেন ওই ব্যবসায়ী।
