ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করলে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে আদালত থেকে বের করার সময় সেখানে জড়ো হওয়া বিক্ষুব্ধ জনতার তোপের মুখে পড়েন সাবেক এমপি কালাম। পরে কোর্ট পুলিশ তাকে দ্রুত প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে পাঠান।
রাজশাহী জেলা কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক আমান উল্লাহ জানান, বুধবার রাজধানী ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী-৪ আসনের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদকে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলন কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। হামলার মামলায় আদালতে তোলা হলে বিচারক সাইফুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে বুধবার রাত ৮টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে রাজশাহীর বাগমারা থানা পুলিশের একটি দল বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ঢাকা থেকে রাজশাহী নিয়ে যায়। বিকেলে তাকে আদালতে তোলা হয়।
আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ এমপি হওয়ার আগে রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র ছিলেন। নানান কারণেই তিনি আলোচিত-সমালোচিত ছিলেন। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়ন পান। এরপর পৌর মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করে নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হককে হারিয়ে প্রথমবারের মতো তিনি এমপি নির্বাচিত হন। এরপর সহধর্মিণী খন্দকার শাইলা পারভীনকে তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র করেন। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর তারা উভয়ই আত্মগোপনে চলে যান।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম জানান, গত ৫ আগস্ট বাগমারায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সবগুলো মামলাতেই আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই আসনের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ সরকার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন। তবে এ ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালামসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে বাগমারা থানায় পৃথকভাবে পর পর মোট ছয়টি মামলা হয়েছে।
এসব মামলায় সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আব্দুল মালেক মন্ডল, গোয়ালকান্দি ইউপির চেয়ারম্যান আলমগীর সরকার, শ্রীপুর ইউপির চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মৃধা ও হামিকুৎসা ইউপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং বর্তমানে কারাগারে আছেন। সর্বশেষ আবুল কালাম আজাদ রাজধানীতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।