মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

বাগমারায় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ‘জান্নাত’ চেয়ে পদ হারা হলেন আ. লীগ নেতা

আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৫:১৭ পিএম

রাজশাহীর বাগমারায় বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ‘জান্নাত’ চেয়ে মোনাজাত করায় দলীয় পদ হারিয়েছেন তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক।

ঘটনা স্বীকার করে আব্দুর রাজ্জাক দাবি করেছেন, তিনি অসচেতনভাবে এ কথা বলে ফেলেছেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ার কারণে এমন হয়েছে বলে দাবি করে তিনি এ জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমাও প্রার্থনা করেছেন।

তবে, তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ জানান, বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে এমন অসচেতন আচরণ আমরা ক্ষমা করতে পারি না। এ কারণে সভা করে তাকে পদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে তাহেরপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগ নেতারা। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সেখানে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাক।

মোনাজাতের একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতার জনক, জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যারা হত্যা করেছে আল্লাহ- তারা মানুষ নয়, তারা অমানুষ। মাবুদ, জাতির জনক এবং তার পরিবারকে যারা হত্যা করেছে, আল্লাহ- সকলকে তুমি জান্নাত দান করে দিও আল্লাহ।”

এই মোনাজাতের পরপরই এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। মোনাজাতের একটি ভিডিও ক্লিপও ছড়িয়ে পড়ে।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, এই মোনাজাত নিয়ে সমালোচনা চলছে। এটি নিয়ে শুক্রবার বিকেলে পৌর আওয়ামী লীগের জরুরি সভা হয়েছে। সেখানে আলোচনা শেষে আব্দুর রাজ্জাককে ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সাথে তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, আব্দুর রাজ্জাক বহু বছর ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। তিনি পারিবারিকভাবেই আওয়ামী লীগ। আব্দুর রাজ্জাক নিজে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চেয়েছেন। হয়তো তিনি ভুল করে অসাবধানতাবশত এটি বলে ফেলেছেন। কিন্তু তারপরও বঙ্গবন্ধুর বিষয় যখন সম্পৃক্ত, তাই এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।

আব্দুর রাজ্জাক তার মোনাজাতের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি এ জন্য দুঃখিত, ক্ষমাপ্রার্থী। আমি স্থানীয় আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। দেশবাসীর কাছে আমি ক্ষমা চাই।

তিনি বলেন, আমি বহু বছর ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। অনেক অনুষ্ঠানে মোনাজাত করেছি। কিন্তু আমার অজান্তে ভুল করে এমন হয়ে গেছে। আমি খুনিদের জাহান্নাম চাইতে গিয়ে জান্নাত বলে ফেলেছি।

তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং অনেক রাতে এই মোনাজাত হওয়ায় এমন হয়ে থাকতে পারে বলে দাবি করেন আব্দুর রাজ্জাক। দল থেকে বহিষ্কার করা হলেও তিনি ভোট আওয়ামী লীগকেই দেবেন উল্লেখ করে বলেন, দল থেকে বহিষ্কার করলেও ভোট দিতে তো আর নিষেধ নাই।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত