ফেনীর সোনাগাজীর বাগিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভার ব্যানারে সরকার নির্ধারিত ব্যানার ব্যবহার না করে গত বছরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত ব্যানার ব্যবহার করায় প্রধান শিক্ষকসহ ৯ শিক্ষককে শোকজ করেছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
গত মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইবলাম সাক্ষরিত শোকজ কপিতে উল্লেখ করা হয়, বাগিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্যাচমেন্ট এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও স্থানীয় সাংবাদিক মাধ্যমে জানতে পারেন যে আপনারা গত বছরের ব্যানার ব্যবহার করে 'মহান বিজয় দিবস ২০২৪' উদযাপন করেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে শেয়ার করেছেন। যা সরকারি কর্মচারী হিসেবে মোটেও সমীচীন হয়নি। এমতাবস্থায় আপনাদের এমন কর্মকাণ্ডের জন্য কেন আপনাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর সুপারিশ করা হবে না তার সুষ্পষ্ট জবাবপত্র প্রাপ্তির ৫ দিনের মধ্যে দাখিল করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
জানা গেছে, মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভার ব্যানারে বর্তমান সরকার নির্ধারিত ব্যানার ব্যবহার না করে গত বছরের বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত পুরাতন ব্যানার ব্যবহার করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নজরে আসলে তিনি প্রধান শিক্ষক বিষ্ণু লাল শীল, সহকারী শিক্ষক আবু তাহের, নুর আলম, আফরোজা আক্তার, মাঈন উদ্দিন, নাসরিন সুলতানা, তৌহিদুল ইসলাম, নুর করিম ও আবুল কালামকে কৈফিয়ত তলব করে শোকজ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক জানান, বিজয় দিবসের প্রোগ্রামের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিস ২ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক টাকা খরচ না করার জন্য নতুন ব্যানার না ছাপিয়ে পূর্বের ব্যানারটি টাঙিয়ে প্রোগ্রাম শুরু করেন। শিক্ষা অফিস বিজয় দিবসের প্রোগ্রামের ছবি দিতে বলেছে তাই শুধুমাত্র সকল শিক্ষক একসাথে দাঁড়িয়ে ফটোসেশনের জন্য ব্যানারটি দেয়ালে লাগানো হয়েছিল।
প্রধান শিক্ষক বিষ্ণু লাল শীল জানান, গত বারের বরাদ্দকৃত টাকাও আমরা পাইনি। তাই এবারের বরাদ্দের টাকাও কখন পাব জানি না। এ ছাড়া ব্যানারটি পিয়নসহ সহকারী শিক্ষকবৃন্দ দেয়ালে টাঙিয়েছেন। টাঙানোর পর ব্যানার পিছনে থাকায় ভাল করে খেয়াল করিনি। আমাদের এক সহকারী শিক্ষক তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করায় স্থানীয়রা জেনেছেন। পরবর্তীতে ছবিগুলো ফেসবুক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনো শোকজের কপি পাননি বলে জানান তিনি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, সরকারি লোগো ব্যতিত অন্য কিছু ব্যবহার না করার জন্য সকল বিদ্যালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নতুন ব্যানারের জন্য দুই হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, এরপরও কেন বিজয় দিবসের প্রোগ্রামে পুরাতন ব্যানার ব্যবহার করেছে, এ জন্য ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। জবাব পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।