মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

আরাকান আর্মি

রাখাইনে সংঘাত থামবে কিনা নির্ভর করছে জান্তার ওপর

আপডেট : ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৯ পিএম

সামরিক পদক্ষেপের পরিবর্তে রাজনৈতিক উপায়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের চলমান সংঘাত নিরসনে আরাকান আর্মি প্রস্তুত। সশস্ত্র বিদ্রোহী সংগঠনটির মুখপাত্র খাইং থুখা বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে যে ধ্বংসাত্মক অভিযান চলছে তা থামাতে পারবে কিনা তা জান্তা সরকারের ওপর নির্ভর করছে।

জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীটি রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা সামরিক পদক্ষেপের পরিবর্তে রাজনৈতিক উপায়ে অভ্যন্তরীণ সংঘাত সমাধানে প্রস্তুত।

খাইং থুখা বলেন, ‘রাজনৈতিক সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান খোঁজা শুরু থেকেই আমাদের নীতি। আমরা এই নীতি মেনে চলছি এবং আলোচনার দরজা খোলা রেখেছি। আমাদের আক্রমণ বন্ধ হবে কিনা তা মূলত শাসকগোষ্ঠী কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায় তার ওপর নির্ভর করে।

আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের দক্ষিণতম প্রান্তে গোয়া টাউনশিপের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দিনই এই বিবৃতি এলো। অর্থাৎ ২০২৩ সালের নভেম্বরে আক্রমণ শুরুর মাত্র ১৩ মাস পর পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যটির ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ১৪টিই এখন তাদের দখলে। এই প্রক্রিয়ায়, শাসকগোষ্ঠী অন্যান্য অপমানজনক পরাজয়ের মধ্যে অ্যান টাউনশিপে তার ওয়েস্টার্ন কমান্ডের সদর দফতর হারিয়েছিল।

আরাকান আর্মির এখন নাটকীয় সুবিধা রয়েছে; কারণ এটি রাখাইনে বেশিরভাগ চীনা প্রকল্প নিয়ন্ত্রণ করে, যা তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন এবং চীনের স্থলবেষ্টিত ইউনান প্রদেশ থেকে ভারত মহাসাগরে প্রবেশাধিকারসহ বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে।

আরাকান আর্মির মুখপাত্র এসব প্রকল্প সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যে বলেছি— জনগণের জন্য উপকারী যেকোনো বিনিয়োগের জন্য সর্বোত্তম সুরক্ষা এবং সহযোগিতা করব। এই নীতিতে কোনো পরিবর্তন নেই।’

আরাকান আর্মি জানিয়েছে, ১১তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের নেতা কর্নেল থান সো উইনসহ বেশ কয়েকজন জান্তা কমান্ডার গওয়াতে লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন।

আরাকান আর্মি তাদের সদস্য নিহতের সংখ্যা, যুদ্ধবন্দীদের বিবরণ এবং জব্দ করা নথিপত্রের বরাত দিয়ে বলেছে, সরকার গওয়াকে রক্ষার জন্য প্রায় ১,২০০ সেনা মোতায়েন করেছিল, সংঘাতে যাদের মধ্যে আনুমানিক ৭০০ জন মারা গেছে। তখন বেশ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত সাঁজোয়া যান, অস্ত্র ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম জব্দ এবং অনেক জান্তা সেনাকে আটক করা হয়।

চীনের চাপের মুখে আরাকান আর্মির সহযোগী মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি ও তা'আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মিও আলোচনায় বসার জন্য তাদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। বেইজিং কয়েক মাস ধরে সরবরাহ ও সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে (ইএও) সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শেষ করতে চাপ দিয়ে আসছে।

জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং বারবার শান্তি আলোচনার আহ্বান জানালেও ইএও নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোতে প্রাণঘাতী বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল হামলা অব্যাহত রেখেছে।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত