আলীবাবার গুপ্ত মন্ত্রে
খুলেছে আলীবাবার গুপ্ত মন্ত্রে অজস্র দুয়ার জীবনভর
নেড়েছি কড়া সজোরে
কিন্তু একটি দুটি কপাট থেকেছে বন্ধ,
থেকেছে অপ্রবেশ্য কিছু চারচালা ঘর,
উপে গেছে আতর সুচারু বোতলে লেগে থেকেছে সুগন্ধ;
প্রত্যাশিত মৌসুমে ফিরে এসে খেজুরগাছে খুঁটেছে
সূর্যস্নাত শিরিন স্ফটিক হলুদাভ পশমের হরিয়াল
আজও কিন্তু সমুদ্রজলে নিঃশ্বাসরহিত হয়েছে নিযুত কীট,
তিলে তিলে তিলোত্তমা হয়েছে লোহিত প্রবাল;
সরীসৃপের শরীর থেকে খসে পড়েছে খোলস
বদলে গেছে সংগীতের খোল-নলচে
পরিবর্তিত হয়েছে সামাজিক রীতি,
কারও কারও জুটেনি প্রাপ্তি কখনো
যদিও মেহনতে মত্ত থেকেছে জীবনভর নিরলস,
থেকে গেছে অবিকল
সরষে ক্ষেতের সোনালি জমিনে টিয়ের সবুজিম উপস্থিতি।
মেকং নদীর বালুচরে
বিগত দিনের স্মৃতিতর্পণের মতো আলাভোলা হাওয়ায়
হেঁটে যাই মেকং নদীর পাড়ে,
বদলায়নি তো তেমন কিছু নাতনির হাত ধরে অন্ধ বৃদ্ধা
বিক্রি করছে বেলফুলের গোড়ে মালা
ঊর্মির ঊর্ণাজাল জড়িয়ে ফিরে এসেছ শুশুকরাজি আষাঢ়ে,
গোধূলির ম্লান রেণুকায় ভাসে জলে রশ্মি বিচ্ছুরিত থালা;
কজওয়ের কাঠের সেতু বেয়ে নেমে আসি দ্বীপাণুতে
কামরাঙার তরুণ বৃক্ষগুলো হয়নি তো তেমন প্রবীণ,
জলপ্রিয় বলাকার কাকলিতে ঋদ্ধ বালুচর ভাসে স্রোতে
কাদাখোঁচার পদচিহ্নে জমে জল ঝলসে রেণুকা সূর্যরঙিন;
দৌড়ের নাওখানা ভেসে যায় ভাটিতে
পুষ্পের উপাচার হাতে মন্দিরের সিঁড়ি বেয়ে
ঘাটলায় এসে বসে লাওলুম গোত্রের জোড়া তরুণী,
কাঁকড়ারা আঁকে রেখাচিত্র তরঙ্গভাসা পলিমাটিতে
মুন্ডিতমস্তক ভিক্ষুরা জপে মন্ত্র জলের কিনারে জ্বালে ধুনি;
মেকং নদী বালুচরে মাঝেমধ্যে নীরবে ফিরে যায় পান্থ
রশ্মির খোয়াবনামায় লেখা হয় স্রোতজলের সহজিয়া নামতা,
নদীর পুরাণ আজও থেকে গেছে অনাদি... অভ্রান্ত
বদলেছে শুধু পঞ্জিকা নিয়ন্ত্রিত পরাধীন প্রণয়ের প্রথা।