দক্ষিণ ভারতের মালয়ালম চলচ্চিত্র শিল্প ২০২৪ সালে দারুণ একটা বছর কাটিয়েছে। ‘মাঞ্জুমাল বয়েজ’, ‘দ্য গোট লাইফ’, ‘প্রেমালু’ এবং ‘মার্কো’সহ বেশ কিছু সফল সিনেমা মুক্তি পেয়েছে সেখানে। বক্স অফিসে হয়েছে জমজমাট ব্যবসাও। তবুও শাটডাউনের হুমকিতে রয়েছে এই ইন্ডাস্ট্রি। কেন?
ভারতের গণমাধ্যমগুলো বলছে, গুরুতর আর্থিক সংকটে পড়েছে মালায়লম সিনেমা। বাজেটের তুলনায় সিনেমাগুলোর ভালো ব্যবসা হলেও শিল্পের ভেতরের পরিস্থিতি ভিন্ন। প্রবল আর্থিক ক্ষতির কারণে প্রযোজকরা ১ জুন থেকে সিনেমার শুটিং ও প্রদর্শনী বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
নিউজ মিনিটের তথ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি, প্রদর্শক, পরিবেশক ও কেরালার ফিল্ম এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের (এফইএফকে) সঙ্গে আলোচনার পর প্রযোজক জি সুরেশ কুমার জানান, ১ জুন থেকে সব সিনেমার শুটিং ও প্রদর্শনী বন্ধ রাখা হবে। বৈঠকে জানানো হয়, ২০২৪ সালে মুক্তি পাওয়া ২০০ সিনেমার মধ্যে মাত্র ২৪টি বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়েছে। বাকি সিনেমাগুলোর কারণে প্রযোজকদের ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি রুপি ক্ষতি হয়েছে।
ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবসায়িকভাবে সফল সিনেমাগুলোর প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। তারা নতুন সিনেমা বা একটু কম বাজেটের সিনেমাগুলোর প্রতি আগ্রহী হচ্ছে না। এই বিষয়টি ইন্ডাস্ট্রির উপর আর্থিক চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই সংকটের মূল কারণ হিসেবে বেড়ে যাওয়া উৎপাদন খরচ এবং অভিনয়শিল্পীদের অতিরিক্ত পারিশ্রমিককেও দায়ী করা হচ্ছে। তাছাড়া সরকারের আরোপিত বিনোদন কর এবং জিএসটি-র মতো করের বোঝা শিল্পের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে বলেও দাবি করছেন অনেক প্রযোজক। এই পরিস্থিতিতে শিল্প চালিয়ে রাখা সম্ভব নয় বলে ঘোষণা দিয়েছেন মালায়লম সিনেমার প্রযোজকেরা। সরকারের কোনো সহায়তা না পাওয়া এবং ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান ট্যাক্স’ স্কিমের ফলে ট্যাক্সের বোঝা বাড়ায় মালয়ালম চলচ্চিত্র শিল্প সমস্যার মুখে পড়েছে। আমরা এত চাপ বহন করতে পারছি না।
সমস্যা সমাধান না হলে, ১ জুন শুটিং ও প্রদর্শনী বন্ধের আগে তিরুভানন্তপুরামে সচিবালয়ের সামনে একটি প্রতীকী ধর্মঘটও অনুষ্ঠিত হবে বলেও ঘোষণা করেন প্রযোজক নেতা জি সুরেশ কুমার।