বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটকে আরও পেশাদার ও আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে সাবেক অধিনায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ। শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই সভায় মূলত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ও জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) মানোন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিপিএলে সময়মতো ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক পরিশোধ, বিদেশি খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং এনসিএলকে বৃষ্টির মৌসুম এড়িয়ে কীভাবে আরও কার্যকরভাবে আয়োজন করা যায়—এসব নিয়ে বিসিবি সভাপতির সঙ্গে মতবিনিময় করেন সাবেক অধিনায়করা।
বিসিবি সভাপতির আমন্ত্রণে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের একঝাঁক সাবেক অধিনায়ক। আলোচনার মূল ফোকাস ছিল ঘরোয়া ক্রিকেটকে আরও পেশাদার ও দর্শকপ্রিয় করে তোলা।
এই ব্যাপারে শাহরিয়ার নাফিস বলেন, ‘মাননীয় বোর্ড সভাপতি বিগত বা বর্তমান সুয়ে বাংলাদেশ দলে যারা অধিনায়কত্ব করেছেন তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। শুভেচ্ছা বিনিময় এবং মত বিনিময় একটা সভা ছিল। এখানে বিপিএল বা অন্যান্য ঘরোয়া টুর্নামেন্ট নিয়ে কথা হয়েছে। বোর্ড সভাপতি অধিনায়কদের সাথে বিপিএল বা এসব টুর্নামেন্ট কীভাবে আরও উন্নতি করা যায়, আকর্ষণীয় করা যায় সেটা নিয়ে কথা বলেছেন। অধিনায়করাও এই ব্যাপারে সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেছেন। আলোচনা ফলপ্রসু ছিল।’
একই ব্যাপারে আরেক সাবেক অধিনায়ক রাজিন সালেহ বলেন, ‘আমাদের কথা ছিল বিপিএল কীভাবে আরও ডেভেলপ করা যায়, সূচিটা কীভাবে আপডেট করা যায়। এনসিএল টি-টোয়েন্টি কখন শুরু করলে আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারব টুর্নামেন্টটা। বিপিএলে আগামীতে যেন আরও ভালো ফ্র্যাঞ্চাইজি আসে, ভালো টুর্নামেন্ট কীভাবে হবে, ভালো বিদেশি ক্রিকেটাররা আসবে, কখন তাদের পাব, ওসব নিয়ে কথা বলা হয়েছে।’
সভায় আমন্ত্রিত ছিলেন বাংলাদেশ দলের একাধিক সাবেক অধিনায়ক। তবে সবাই উপস্থিত হতে পারেননি। গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, আকরাম খান, হাবিবুল বাশার, মোহাম্মদ আশরাফুল, শাহরিয়ার নাফিস, মুমিনুল হক ও লিটন দাস। আমন্ত্রিত হলেও উপস্থিত হননি শফিকুল হক হীরা, রকিবুল হাসান, খালেদ মাসুদ পাইলট, খালেদ মাহমুদ সুজন, তামিম ইকবাল। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি মাশরাফী বিন মর্তুজা ও নাইমুর রহমান দুর্জয়কে। আর সাকিব আল হাসান দেশেই নেই।
শেষ বিপিএল ছিল নানা অনিয়মে ভরা। সময়মতো পারিশ্রমিক পরিশোধ না হওয়া, বিদেশি তারকাদের আগ্রহ কমে যাওয়া, দলগুলোর পেশাদারিত্বের অভাব—এসব সমস্যা ছিল স্পষ্ট। বিসিবি এবার এসব সমস্যা দূর করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এনসিএলের সূচি নিয়ে বিতর্ক থাকায় সেটি নিয়েও মতামত নেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির মৌসুম এড়িয়ে কীভাবে টুর্নামেন্টটি আয়োজন করা যায়, সেটি নিয়েও কথা হয়েছে।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ সাবেক অধিনায়কদের পরামর্শকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। বৈঠকের ফলাফল অনুযায়ী ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষ করে বিপিএলের দল গঠন, পারিশ্রমিক পরিশোধ এবং সূচি পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মানোন্নয়নে এই ধরনের আলোচনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সাবেক অধিনায়করা। এখন দেখার বিষয়, বাস্তবায়নের পথে বিসিবি কতটা অগ্রসর হতে পারে।