শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৭ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

ববি ভিসিকে প্রকাশ্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আল্টিমেটাম

আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৩৯ পিএম

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের বিরুদ্ধে ঘরে বাইরে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ফ্যাসিস্ট বলায় সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বরিশাল নগরীতে সাবেক ও বর্তমান ছাত্রদল নেতারা ভিসির অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন করেছে।

অপরদিকে ভিসি ড. শূচিতা শরমিনকে ফ্যাসিস্ট আখ্যায়িত করে সংবাদ সম্মেলন করেছে ববি শিক্ষকদের একটি অংশ। এ সময় তারা ভিসিকে প্রকাশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচ তলায় গতবার দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ।

এদিকে রোববার মধ্যরাতে ছাত্রসংগঠনের তিন শীর্ষ নেতার সাথে ভিসির বাসভবনে গোপন বৈঠকের ঘটনা ফাঁস হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ার পরে তুমুল সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে শিক্ষকদের এক অংশের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ভিসি শূচিতা শরমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীকে ফ্যাসিস্ট বলে গালি দিয়েছেন। অথচ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ই বাংলাদেশের প্রথম প্রতিষ্ঠান যেখানে শিক্ষার্থীরা পুলিশের গুলির সামনে বুক পেতে দিয়ে পেটোয়া পুলিশ বাহিনীকে প্রতিহত করে প্রথম বিজয় অর্জন করেছিল। আমরা প্রমাণ সহকারে জানি উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিন নিজে ছিলেন ফ্যাসিস্ট শক্তির একজন চিহ্নিত দোসর। তিনি সকল নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। উপাচার্যের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারারের বিরুদ্ধে এমন মামলার এজাহারে অভিযোগের ঘটনা অত্যন্ত নজিরবিহীন ও ন্যাক্কারজনক । একইসাথে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক সকল মামলার প্রতিবাদ ও উক্ত মামলা অতিদ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের সকল ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবির প্রতিও আমরা সুদৃঢ় সহমত পোষণ করছি।

সাংবাদকিদের এক প্রশ্নের জবাবে কোস্টাল স্টাডিজ এন্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হাফিজ আশরাফুল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা চাই আইনের শাসন। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও সংবিধি ঠিক যেভাবে আছে সেভাবেই চলবে। আইনের অপব্যাখ্যা করে যে যার মতো স্বেচ্ছাচারি করে চালাবে এটা আমরা শিক্ষকসমাজ মানি না।

এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে মোকাব্বেল শেখ তার বক্তব্যে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে এবং অবকাঠামো উন্নয়নসহ মোট ৩১দফা দাবির লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। আমরা ধৈর্য্য ধরে আছি। আমাদের ধৈর্য্যর বাঁধ ভাঙবেন না।

এছাড়াও বরিশাল নগরীতে ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দের ব্যানারে উপাচার্যের অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। এ সময় বরিশাল মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খান নাসরিন বলেন, উপাচার্য ছাত্রদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাইকে একযোগে ফ্যাসিস্ট বলেছে। এ মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে। উপাচার্যকে এখান থেকে দ্রুত অপসারণ করে নিতে হবে। কারণ যারা ফ্যাসিস্ট হটিয়েছে তাদেরকে যে ফ্যাসিস্ট বলেছে অথচ সে বড় ফ্যাসিস্ট। একজন ফ্যাসিস্ট কোনোভাবেই এখানে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারে না ।

ববি ভিসি অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন বলেন,  শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে যে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, তা কোনোভাবে কাম্য নয়। একই সাথে মাননীয় উপাচার্য কর্তৃক প্রদেয় শব্দচয়নের কারণে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ যদি ব্যথিত হয়ে থাকেন, তাহলে মাননীয় উপাচার্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছেন।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত