যুক্তরাষ্ট্রে অপচয়, জালিয়াতি এবং দুর্নীতির চিহ্ন খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছে এলন মাস্ক এবং তার দক্ষ টিম। তাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সরকারী কার্যকারিতা বাড়ানোর এবং ফেডারেল ডেটা খতিয়ে দেখার। ইতোমধ্যে তারা সোশ্যাল সিকিউরিটি প্রশাসনে একটি বিশাল অনিয়ম খুঁজে পেয়েছেন।
রবিবার এলন মাস্ক এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) শেয়ার করেছেন, সোশ্যাল সিকিউরিটি ডাটাবেসে কয়েক লাখ, এমনকি কয়েক মিলিয়ন আমেরিকানকে জীবিত হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে যারা আসলে বহু আগেই মারা গেছেন।
এই ডাটাবেজে ১.৩ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের নাম রয়েছে যাদের বয়স ১৫০ থেকে ১৫৯ বছরের মধ্যে, প্রায় ১ লাখ ২২ হাজার জনের বয়স ১৬০ থেকে ১৬৯ বছর এবং ৬ হাজার জনের বেশি মানুষের বয়স ১৭০ থেকে ১৭৯ বছরের মধ্যে।
এছাড়াও, সেখানে আরও কয়েক হাজার মানুষের নাম রয়েছে, যাদের বয়স ১৮০ থেকে ২২৯ বছরের মধ্যে, যার অর্থ তারা গৃহযুদ্ধের (সিভিল ওয়ার) অনেক আগেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
ডাটার একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে মাস্ক বলেন, সোশ্যাল সিকিউরিটি ডাটাবেস অনুযায়ী এই প্রতিটি বয়সের গ্রুপে থাকা ব্যক্তিদের ‘মৃত’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি!
তিনি মজার ছলে যোগ করে বলেন, সম্ভবত টোয়াইলাইট (ভ্যাম্পায়ারদের নিয়ে তৈরি জনপ্রিয় চলচ্চিত্র) বাস্তব, আর অনেক ভ্যাম্পায়ার সোশ্যাল সিকিউরিটি সুবিধা পাচ্ছে। তবে তিনি হয়তো একেবারে ভুল বলছেন না।
কারণ সোশ্যাল সিকিউরিটি রেকর্ডে এমন একজন ব্যক্তির নাম রয়েছে, যার বয়স ২৪০ থেকে ২৪৯ বছরের মধ্যে, এবং আরেকজনের বয়স ৩৬০ থেকে ৩৬৯ বছরের মধ্যে।
এর মানে একজন ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রজাতন্ত্রের শুরুর দিনগুলো দেখেছেন, আর অন্যজন জন্মগ্রহণ করেছেন যখন দেশটি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে ছিল।
রেকর্ড অনুযায়ী, আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দিন বেঁচে থাকা ব্যক্তি ছিলেন জেন ক্যালমেন্ট, যিনি ১২২ বছর বেঁচে ছিলেন, যা গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস স্বীকৃত। তিনি ১৮৭৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৯৭ সালে মারা যান। আরও কয়েকজন মানুষ দীর্ঘায়ু পেয়েছেন, কিন্তু মাস্কের খুঁজে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাদের বয়স তেমন কিছুই না।
সোশ্যাল সিকিউরিটির তথ্য বলছে, বর্তমানে ১৩০ থেকে ১৪৯ বছর বয়সী ৭.৪ মিলিয়নেরও বেশি আমেরিকান জীবিত রয়েছেন!
মাস্ক উল্লেখ করেননি যে এই তথাকথিত প্রবীণরা এখনও সোশ্যাল সিকিউরিটি থেকে পেমেন্ট পাচ্ছেন কি না, তবে তিনি আমেরিকার প্রশাসনিক দক্ষতা সম্পর্কে খুব আশাবাদী নন।
মাস্ক বলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকৃত নাগরিকদের চেয়ে বহু গুণ বেশি ‘যোগ্য’ সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর রয়েছে। এটি সম্ভবত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জালিয়াতি!
সর্বোচ্চ পর্যায়ে, সোশ্যাল সিকিউরিটি প্রশাসন তাদের রেকর্ডের ন্যূনতম তদারকি করতেও ব্যর্থ হয়েছে। আর সর্বনিম্ন পর্যায়ে, করদাতারা হয়তো লাখ লাখ ডলার পরিশোধ করছেন, যা মৃত ব্যক্তিদের পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হচ্ছে।
যে ক্ষেত্রেই হোক না কেন, মাস্কের এই সাম্প্রতিক প্রকাশ্য অনুসন্ধান প্রমাণ করে যে, আমেরিকার ফেডারেল প্রশাসনে ব্যাপক অদক্ষতা রয়েছে এবং এটি সংস্কার এবং হ্রাস করার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি।