বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

তারেক রহমান

যেকোনো মূল্যে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে

আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৭ পিএম

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমাদের যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা যদি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশের যে সর্বনাশের খাদের কিনারে চলে গেছে- সেখান থেকে তুলে আনতে সক্ষম হবো। দেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করে সঠিক ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি সরকার গঠনের দায়িত্ব পাবে।

তিনি বলেন, কিন্তু এই আশা নিয়ে বসে থাকলে চলবে না, সেই জন্য আমাদের নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে। প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকে তৈরি হতে হবে। আমাদের কথা-বার্তা, কাজ-কর্মে সেই প্রতিফলন থাকতে হবে। দেশের মানুষ আমাদের কাছে সেই প্রত্যাশা করে। সেই প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে। দেশের মানুষ দায়িত্ব দিলে সেই দায়িত্ব পালনে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও শপথ নিতে হবে।

দীর্ঘ ১৬ বছর পর সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগরীর সার্কিট হাউজ ময়দানে খুলনা মহানগর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গোটা নগরীতে ছিল উৎসবের আমেজ। সকাল ১০টায় সম্মেলন শুরুর আগেই নেতাকর্মীরা রঙ-বেরঙের গেঞ্জি, টি-শাট, ক্যাপ পরে সম্মেলনস্থলে জড়ো হন। ২০১২ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে এই সার্কিট হাউজ ময়দানে শেষ সমাবেশ করেছিল বিএনপি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা অনেক আগেই বলেছিলেন— স্বৈরাচার দেশকে ধ্বংস করে পালিয়ে যাবে। দেরিতে হলেও তা সত্য হয়েছে। স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার দেশের সম্পদ লুট করে, দেশকে ধ্বংস করে তারপর পালিয়েছে। ধ্বংস করেছে দেশের গণতন্ত্র আর মানুষকে বঞ্চিত করেছে তার ভোটাধিকার থেকে। তাই যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। যে কোনোভাবে বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, আমরা দেশের সংস্কার নিয়ে কথা বলছি। কিন্তু সংস্কার নিয়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা অবাস্তব। দেশের মানুষের মূল সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষকের কৃষি সমস্যার সমাধান করতে হবে। বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে যুক্তরাজ্যের আদলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।

তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, কীভাবে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে, কীভাবে মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, কথা বলার অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক অধিকার আদায় করতে গিয়ে আমাদের  হাজারো নেতাকর্মী গুম হয়েছে, লাখ লাখ নেতাকর্মী বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলার কারণে এখনো তাদের কোর্টে হাজিরা দিতে হচ্ছে। কিছুদিন আগেও ১৪০০ মানুষ শহিদ হয়েছেন।

নেতাকর্মীদের সর্তক করে তারেক রহমান বলেন, আমরা অযাচিত তর্ক-বিতর্ক না করে জনগণ ও দেশের স্বার্থ রক্ষা থেকে দূরে সরে না যায়। নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ প্রতিদিন যুদ্ধ করছে। এখন বাজার সিন্ডিকেট কাজ করছে। দেশের মধ্যে স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হবে। এই কাজগুলো করতে হলে সঠিক ব্যক্তিদের নির্বাচিত করতে হবে। আমরা যেন দেশের এমন পরিস্থিতি তৈরি না করি, যাতে করে পতিত স্বৈরাচার হোক অথবা এমন কেউ হোক যারা বাংলাদেশের ভালো চায় না তারা সুযোগ  পেয়ে যায়।

খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের সঞ্চালনায় দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও সংগীত শিল্পী বেবী নাজনীন, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কেন্দ্রীয় ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, গবেষণাবিষয়ক কৃষিবিদ শামীমুল ইসলাম, জয়ন্ত কুণ্ডু, সৈয়দা নার্গিস আলী, জেলা বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, যশোর জেলা বিএনপি সভাপতি সাবেরুল ইসলাম সাবু, কাজী আলাউদ্দিন, আমিরুল ইসলাম কাগজী প্রমুখ।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত