রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিশেষ নিরাপত্তা প্রদান বিষয়ক প্ররক্ষা নির্দেশিকায় বিচার বিভাগকে হেয় করার অভিযোগ এনেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। শুনানি নিয়ে রাষ্ট্রীয় নির্দেশিকার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে তলব করেছে উচ্চ আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ আদেশ দেয়।
আগামী ১৮ মার্চ সচিবকে হাইকোর্টে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। আদালত গত ২ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশিকার কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে। রুলে কেন এই নির্দেশিকাকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। হাইকোর্টের আদেশের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত ২ মার্চ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে যে নিরাপত্তা প্ররক্ষা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিকে রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ অন্য পদগুলোর সঙ্গে একইরকম তুলনা করা হয়েছে। আপিল বিভাগের বিচারপতিকে পুলিশের মহাপরিদর্শকের সম্মানে রাখা হয়েছে। হাইকোর্টের বিচারপতিদের সিনিয়র সচিব ও সচিবদের সঙ্গে রাখা হয়েছে।
আইনজীবী বলেন, আপিল বিভাগ এক রায়ে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদা ক্রম) নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ২০২০ সালের যে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স আছে তার সব কিছু লঙ্ঘন করে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এ জন্য বিষয়টি আমরা আদালতের নজরে এনেছি।
তিনি বলেন, আদালতে ২০২০ সালের যে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স দেখিয়েছি, আপিল বিভাগে যে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়েছে, সে রায়ের কথা বলেছি। সেই মামলার রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা) আবেদন শুনানির জন্য আগামী ২৭ এপ্রিল ধার্য আছে। এই প্রেক্ষিতে কি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা জারি করলো তা বিস্ময়কর!’
শিশির মনির বলেন, ‘আইনের তোয়াক্কা না করে এই ধরনের নীতিমালা জারি করে মূলত বাংলাদেশের সংবিধান ও বিচার বিভাগের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করা হয়েছে।’