মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১
দেশ রূপান্তর

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতি

হাসিনা-রেহানাসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন

আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৫, ০৬:৩৮ এএম

অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল আবাসিক প্রকল্পে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা এবং তাদের পরিবারের সদস্যসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) । গতকাল সোমবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।

দুদক ডিজি জানান, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পে ১০ কাঠা করে ছয়টি (মোট ৬০ কাঠা) প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয়টি হয়েছিল। এসব মামলার অভিযোগ দুদকের তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। চার্জশিটে শেখ হাসিনা-শেখ রেহানাসহ তাদের পরিবারের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা, গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।

মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও জেনেশুনে স্বজ্ঞানে পরস্পর যোগসাজশ করে নিজেরা লাভবান হতে এবং অন্যকে লাভবান করতে রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর রোড থেকে ১০ কাঠা করে মোট ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। আসামিরা যোগসাজশ করে নিজে ও অপরকে শাস্তি থেকে রক্ষা করতে নথি বিনষ্ট অথবা গায়েব করে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় আদালতে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দেওয়া হয়।

যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল হচ্ছে তারা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, বোনের ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, বোনের মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক। এ ছাড়া তালিকায় আছেন তৎকারীন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, সাবেক সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) অলিউল্লাহ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি) কামরুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, উপপরিচালক হাবিবুর রহমান এবং সহকারী পরিচালক ফারিয়া সুলতানা। আসামিদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এপিএস-২ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীকে মামলায় আসামি করা না হলেও চার্জশিটে আসামি করা হয়েছে।

দুদকের তথ্যমতে, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। অনুসন্ধান শেষে চলতি বছরের ১২,১৩ ও ১৪ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এপিএস-২ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমদেকে আসামি করা হয়নি। মামলার তদন্তকালে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদের দুজনকে নতুন করে চার্জশিটভুক্ত করা হয়।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত