পাকিস্তানের বেলুচিস্তান অঞ্চলে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে হামলা চালিয়ে সেটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। পরে অপহৃত জাফর এক্সপ্রেস থেকে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে অন্তত ১০৪ জন যাত্রীকে। পাক সেনা সূত্রে তেমনই দাবি করা হয়েছে। তাদের আরও দাবি, এই অভিযানে এখনও পর্যন্ত অন্তত ১৬ জন বালুচ বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন।
পাক রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, অপহৃত জাফর এক্সপ্রেস থেকে উদ্ধার হওয়া ৫৭ যাত্রীকে বুধবার ভোরে বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় পাঠানো হয়েছে। বাকি ২৩ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মাচে। আর আহত ১৭ জন যাত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের মধ্যে মোট ৫৮ জন পুরুষ, ৩১ জন মহিলা এবং ১৫ জন শিশু রয়েছে।
পাক সেনা সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, বাকি জিম্মি যাত্রীদের উদ্ধারের জন্য এখনও উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। তবে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকেই জঙ্গিরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সে জন্যই উদ্ধার অভিযানে বেগ পেতে হচ্ছে সেনাকে।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা নাগাদ কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেসের দখল নেন স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র বালুচ গোষ্ঠী বিএলএ (বালুচ লিবারেশনের আর্মি) বিদ্রোহীরা। কাচ্চি বোলান জেলায় পেহরো কুনরি এবং গাদালারের মাঝামাঝি জায়গায় যাত্রিবাহী ট্রেনটি অপহরণ করা হয়। নয়টি কোচবিশিষ্ট ট্রেনটিতে প্রায় ৫০০ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে শতাধিক জিম্মি হন। বিএলএর তরফেও ঘটনার দায় স্বীকার করে শতাধিক যাত্রীকে বন্দি করার কথা জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার রাতেই বিদ্রোহীদের অপহৃত ট্রেনের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল পাক নিরাপত্তাবাহিনীর উদ্ধারকারী দল। তাদের মধ্যে পাক সেনার ‘স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ’-এর কমান্ডোরা রয়েছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। খবর পেয়েই বিএলএ হুমকি দেয়, সেনা অভিযান না থামালে বন্দিদের খুন করা হবে। উদ্ধারকারী সেনাদের আটকাতে রেললাইনের একাংশ উড়িয়েও দেন বিদ্রোহী বালুচ যোদ্ধারা।
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ট্রেনে থাকা অন্তত ৩০ জন সেনা ও আধাসেনা বালুচ বিদ্রোহীদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। পিছু হটেনি সেনা। পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে শুরু হয়েছে অভিযান।
হামলাকারী গোষ্ঠী বিএলএ বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাসহ ট্রেনের যাত্রীদের একটি বড় অংশকে তারা জিম্মি করছে। তাদের উদ্ধারের কোনো প্রচেষ্টা নেওয়া হলে ‘ভয়াবহ পরিণতি’ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নওয়াজ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।