আতলেতিকো মাদ্রিদ বিদায় নিয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলো থেকে। আতলেতিকোর জন্য বুধবার রাতটি ছিল আরেকটি হৃদয়ভাঙার রাত। তবে তাদের এবারের বিদায় ঘিরে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালের বিপক্ষে খেলে বিদায়ের ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে।
গত ১১ বছরে পাঁচবার রিয়াল ও আতলেতিকো মাদ্রিদ নকআউটে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই জয়ী হয়েছে রিয়াল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নাটকীয়ভাবে।
২০১৪ সালের লিসবন ফাইনাল সেই দুঃসহ স্মৃতি হয়ে আছে আতলেতিকো সমর্থকদের মনে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এগিয়ে থাকা দলটি ট্রফি জয়ের দ্বারপ্রান্তে ছিল, কিন্তু ৯৩ মিনিটে সার্জিও রামোসের হেড গোল এনে দেয় রিয়াল মাদ্রিদকে। তাতে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে, শেষ পর্যন্ত রিয়াল সহজেই ৪-১ ব্যবধানে ম্যাচটি জিতে নেয়।
দুই বছর পর মিলানের ফাইনালে ফের দেখা হয় দুই দলের। এবার গ্রিজমান পেনাল্টি মিস করেন, ম্যাচটি ১-১ এ শেষ হয়। টাইব্রেকারে তাদের হতাশা আরও বাড়ে, গোলকিপার ইয়ান ওবলাক কোনো শট আটকাতে পারেননি, আর আতলেতিকো খেলোয়াড় মিস করেছিলেন। রিয়াল মাদ্রিদ টাইব্রেকারে ৫-৩ ব্যবধানে জয় পেয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরেন।
২০১৪-১৫ মৌসুমের কোয়ার্টার ফাইনালে রিয়াল-আতলেতিকো লড়াই হয়। দুই লেগের লড়াইয়ে গোলের সুযোগ কম ছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত জাভিয়ের হার্নান্দেজের একমাত্র গোলে জয় পায় রিয়াল।
২০১৬-১৭ মৌসুমের সেমিফাইনালে খুব একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারেনি আতলেতিকো মাদ্রিদ। প্রথম লেগেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর হ্যাটট্রিকে ম্যাচ প্রায় শেষ হয়ে যায়, আর দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ ব্যবধানে জয় নিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায় রিয়াল।
১৯৭৪ সালে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল আতলেতিকো কিন্তু ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে বায়ার্নের হ্যান্স জর্জ শোয়ার্জেনবেক দূরপাল্লার এক শটে গোল করে ম্যাচ টাই করে দেন। পরবর্তী প্লে-অফে বায়ার্ন ৪-০ ব্যবধানে জিতে ট্রফি জেতে।
কোচ দিয়েগো সিমিওনের অধীনে আতলেতিকো কোপা দেল রে, ইউরোপা লিগ, স্প্যানিশ সুপারকাপ, এমনকি ২০১৭-১৮ মৌসুমে ইউরোপিয়ান সুপার কাপেও তারা রিয়ালকে হারিয়েছিল। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়ালের সামনে এলেই এলোমেলো আতলেতিকো।
আবারও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটল। রিয়াল মাদ্রিদই শেষ হাসি হাসলো।