বাইসাইকেল একটি পরিবহন মাধ্যম হিসেবে দীর্ঘ সময় ধরে পৃথিবীজুড়ে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বাংলাদেশে, বিশেষত গত কয়েক বছর ধরে, বাইসাইকেল ইন্ডাস্ট্রি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে এবং এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল হতে চলেছে।
বাংলাদেশে বাইসাইকেল ইন্ডাস্ট্রি গত কয়েক বছরে ব্যাপক অগ্রগতি করেছে। শহরাঞ্চলে যানজট, পরিবেশদূষণ এবং স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক সুবিধার কারণে বাইসাইকেলের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। গ্রামাঞ্চলেও এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ ছাড়া বাইসাইকেল উৎপাদনে স্থানীয় উদ্যোগের পরিমাণ বাড়ছে। চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকায় বেশ কিছু কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মানের বাইসাইকেল তৈরি করছে এবং স্থানীয় বাজারে ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের বাইসাইকেল কারখানাগুলো এখন আন্তর্জাতিক বাজারেও প্রবেশ করছে। ভারত, পাকিস্তান এবং আফ্রিকার কিছু দেশে বাংলাদেশ থেকে বাইসাইকেল রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পরিবেশের প্রতি মানুষের সচেতনতা বেড়েছে এবং সাইকেল একটি পরিবেশবান্ধব মাধ্যম হিসেবে দেখা হচ্ছে। যানজট এবং তীব্র যানবাহন দূষণের কারণে বাইসাইকেল ব্যবহারের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। স্বাস্থ্য সচেতনতা বদ্ধি পাওয়ায় বাইসাইকেল চালানো একটি কার্যকরী ফিটনেস কার্যক্রম হিসেবে জনপ্রিয় হচ্ছে। ফিটনেস, ওজন কমানোর জন্য অনেকেই বাইসাইকেল চালানোকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবছেন।
এ ছাড়াও বিশেষ করে ঢাকার মতো বৃহৎ শহরে যানজট একটি বড় সমস্যা। বাইসাইকেল চলাচল করলে এই যানজটের সমস্যা কিছুটা কমতে পারে। এতে সময়ও বাঁচবে এবং পরিবেশদূষণ কমবে। যেসব প্রতিষ্ঠান দেশে বাইসাইকেল উৎপাদন করছে তার মধ্যে অন্যতম আকিজ ভেঞ্চার গ্রুপের আকিজ বাইসাইকেল। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৩ সালে যাত্রা শুরু করে এবং অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের বাইসাইকেল বাজারে একটি বিশ্বস্ত ও স্বনামধন্য ব্র্যান্ড হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আকিজ বাইসাইকেলের টাঙ্গাইলের মির্জাপুরস্থ কারখানায় ১২ থেকে ২৭.৫ ইঞ্চি সাইজে এবং ২৬টি মডেলেরও বেশি আকর্ষণীয় ডিজাইন ও কালারের বাইসাইকেল তৈরি হচ্ছে। সাইকেলের মডেলগুলোর মধ্যে রয়েছে চ্যাম্পিয়ন, সার্ক, ট্যাক্সি, আলফা, ইগ্নিটোর, রক্সটার, ঈগল-এক্স, বন সিরিজ, হাই স্পিড এবং ট্র্যাডিশনাল সাইকেল ইত্যাদি।
আকিজ বাইসাইকেলের পরিচালক জয়নুল আবেদিন বলেন, ‘বাংলাদেশ শুধু না, পৃথিবীর আধুনিক টেকনোলজি নিয়ে আকিজ বাইসাইকেল যাত্রা শুরু করেছে। আগামী দিনগুলোতে নিত্যনতুন ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে উৎপাদিত বাইসাইকেল এবং বাইসাইকেল সম্পৃক্ত পণ্য মানুষের হাতে পৌঁছে দেওয়ার অভিপ্রায় আছে।
বাংলাদেশে বাইসাইকেল শিল্প গত কয়েক বছরে অভূতপূর্ব অগ্রগতি লাভ করেছে। ভবিষ্যতে এ খাতের সম্ভাবনা অনেক বেশি। পরিবেশবান্ধব, স্বাস্থ্যকর এবং আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়ায় বাইসাইকেল ব্যবহার আরও বাড়বে। তবে এই শিল্পের যথাযথ বিকাশের জন্য সরকারের সহায়তা, উন্নতপ্রযুক্তি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সাইক্লিং সংস্কৃতি গড়ে তোলা প্রয়োজন। যদি এই সমস্যাগুলোর সমাধান করা যায়, তবে বাংলাদেশে বাইসাইকেল ইন্ডাস্ট্রি একটি শক্তিশালী এবং লাভজনক খাতে পরিণত হতে পারে।
আকিজ বাইসাইকেলের মার্কেটিং ম্যানেজার আসাদুজ্জামান দিপু বলেন, ‘আমরা শুধু বাইসাইকেল বিক্রি করি না, আমরা প্রত্যেক গ্রাহকের স্বপ্নপূরণে অংশীদার হই। আকিজ বাইসাইকেল এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে স্টাইল, আরাম ও টেকসই গুণগত মান নিশ্চিত হয়। প্রতিটি রাইড শুধু গন্তব্য নয়, বরং আপনাকে আপনার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় জয়ের লক্ষ্যে।’
চ্যাম্পিয়ন
চ্যাম্পিয়ন সাইকেলটি পাওয়া যাচ্ছে ১২,১৬, ২০ ইঞ্চি সাইজের ২টি কালারের। সাইকেলটিতে ব্যবহার করা হয়েছে, আন্ডার ডিকলস ডিজাইন, অ্যালোয় স্টিম হ্যান্ডেল, হাফ অ্যালোয় ব্রেক লিভার, স্টিল বাস্কেট, কেনলি হেডসেট, কালারফুল স্পোক, ফ্যাশইং ট্রেনিং হুইল ইত্যাদির সমন্বয়ে ডিজাইন খুবই আকর্ষণীয় হওয়ায় বাচ্চাদের চাহিদার শীর্ষে।
হাই স্পিড
আকিজ বাইসাইকেলের নতুন সংযোজন হাই স্পিড কোয়ালিটি, ফাংশন ও ডিজাইনের দিক থেকে ২৪ ও ২৬ ইঞ্চি ক্যাটাগরিতে বাজারে চমক নিয়ে এসেছে। এতে রয়েছে নিকো হেডসেট, কার্বন ফ্রেম, অ্যালোয় ক্রাউন সাস্পেনশন, সানরানের ট্রান্সমিশন, শিমানো শিফটার ইত্যাদি।
বিজয়
ট্র্যাডিশনাল সাইকেল ক্যাটাগরিতে বাজারের শীর্ষে থাকা আকিজ বাইসাইকেলের বিজয় ২৪ ও ২৬ ইঞ্চি দুটি কালারের সিঙ্গেল ও ডাবল বারের পাওয়া যাচ্ছে। এতে ব্যবহার করা হয়েছে স্টিল ফর্ক, জয়েন্ট লার্জ ডায়া টিউব, ১৫ ম্যাক্রন হাব উইথ ডোম নাট, আরামদায়ক সিট, বেন্ডিং চেইন হুইল এবং ক্র্যাংক ও ডাবল স্প্রিং স্ট্যান্ড। এর দীর্ঘস্থায়ী ডিজাইনের কারণে বাজারে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।