দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় উঠে গেছে সড়কের কারপেটিং। সরে গেছে দুপাশের মাটি ও ইটের খোয়া। ইটের খোয়া সরে সড়কের বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্তের। যেই গর্তে প্রতিদিনই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন কোন না কোন যানবাহন। আহত হচ্ছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন বয়সের যাত্রী। এমন বেহাল দশা তৈরি হয়েছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের সুটিয়া-আঠারবাড়ি খালবলা সড়কের।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ‘সুটিয়া বাজার থেকে আঠারবাড়ী খালবলা বাজার পর্যন্ত সড়কটি সাড়ে ৪ কিলোমিটারের। ২০০২ সালে সড়কটি পাকা হয়। নির্মাণের কয়েক বছরের মধ্যেই সড়কের বিভিন্ন অংশের কারপেটিং উঠে গিয়ে এবড়োথেবড়ো হয়ে পড়ে। এরপর সড়কের দুপাশের অংশের এবং বিভিন্ন স্থানের ইটের খোয়া সরতে সরতে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত তৈরি হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, অন্তত দেড় দশক ধরে সড়কটির এমন বেহাল অবস্থা থাকলেও তা মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সুটিয়া বাজারের পর থেকেই এবড়োথেবড়ো সড়কের বেশিরভাগ অংশেই খানাখন্দে ভরা। শুধু তাই নয় একটু পর পর বিশাল-বিশাল গর্ত। এতে যানবাহন চলে হেলেদুলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের সুটিয়া, জাটিয়া, বিজয়পুর, ফতেপুর, রোকনপুর, কাহেদগ্রাম, সাগুলি, ভাসাটি, পাইস্কা, হীরাধর গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়ক এটি।
পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী সরিষা ইউনিয়নের মাছিমপুর, কুর্শিপাড়াসহ আরও বেশ কয়েকটি গ্রামের একমাত্র যোগাযোগের প্রধান সড়কও এটি। স্থানীয় অটোরিকশাচালক মো. নুর ইসলাম বলেন, ‘এমন কোনো দিন নেই যে গর্তের মধ্যে দু-একটা অটোরিকশা উইলডেয়া পড়ে না। আর গাড়িতে থাহা যাত্রিরা আহত অয়না।’ সড়কটি দ্রুত মেরামত না হলে যেকোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে বলে জানান নুর ইসলাম।
পানান ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আতাহারুজ্জামান বলেন, ‘বিভিন্ন সময় লোকজন এসে ছবি তোলে আর মাপজোখ করে কিন্তু ভাঙা রাস্তা আর মেরামত হয় না। রাস্তাটি ভাঙতে ভাঙতে এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। কয়েক দিন আগেও সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী অটো থেকে পড়ে গিয়ে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছে।’
জাটিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান আকন্দ হলুদ বলেন,’ এই সড়ক দিয়ে পানান ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, আঠারবাড়ী ডিগ্রি কলেজ, এমসি উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যাওয়া-আসা করে। জনগুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কের এত জঘন্য অবস্থা তৈরি হয়েছে, তবুও যেন দেখার কেউ নয়।’
বর্তমান জাটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামছুল হক ঝন্টু বলেন,’ সড়কটির বেহাল অবস্থার কথা একাধিকবার মিটিং উত্থাপন করেছি। তবুও বিষয়টি আমলে নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আমিনুল ইসলাম বলেন,’ সড়কটির বেহাল অবস্থার কথা অবগত আছি। সড়কটির মেরামতের জন্য অচিরেই প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সংস্কার করা হবে।’