ফেনী সদর উপজেলার কালীদহ ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবিন্দপুর এলাকায় যৌতুক না পেয়ে মারজান আক্তার ঝুমুর (১৮) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ৪ মার্চ ওই গৃহবধূকে পেটানোর পর শনিবার (১৫ মার্চ) চিকিৎসাধিন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি
এ ঘটনায় পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামি ঝুমুরের শ্বশুর সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে।
জানা যায়, গত ৮ ডিসেম্বর ফেনীর গোবিন্দপুর গ্রামের কামু ভূঁইয়া বাড়ির সাহাব উদ্দিনের ছেলে প্রবাসী সাইদুর রহমানের সাথে পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সোনাগাজী উপজেলার আলমপুর গ্রামের আবদুল হালিমের মেয়ে মারজাহান আক্তার ঝুমুর। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজন করে আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়। তার ৫ দিন পরেই স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন ৩ লাখ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণ যৌতুক দাবিতে শারীরিক নির্যাতন করে পিটিয়ে আহত করা হয়।
মামলার এজাহার ও নিহতের পরিবারিক সূত্র জানায়, পারিবারিকভাবে বিয়ের পর ঝুমুরের স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন ৩ লাখ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণ যৌতুক দাবি করে। ঝুমুরের পিতা নির্মাণ শ্রমিকের পক্ষে তা দেওয়া অসম্ভব হওয়ায় নববধু ঝুমুরের ওপর নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে। ৪ মার্চ সকালে এসব বিষয় নিয়ে তর্ক বিতর্কের একপর্যায়ে স্বামী তৌহিদ, শ্বশুর সাহাব উদ্দিন ও শাশুড়ি বিবি হাজেরা একত্রিত হয়ে ঝুমুরকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। অবস্থা বেগতিক দেখে স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা তাকে প্রথমে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ও পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
ঝুমুরের মা ফরিদা আক্তার বলেন, খবর পেয়ে আমার মেয়েকে দেখতে আমরা চট্টগ্রাম হাসপাতালে যাই। সেখানে মেয়ের মুখে নির্যাতনের বিস্তারিত জেনে ১২ মার্চ ফেনী মডেল থানায় মেয়ের জামাই তৌহিদ, শ্বশুর সাহাব উদ্দিন ও শাশুড়ি হাজেরাকে আসামি করে মেয়ের বাবা আবদুল আলিম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে। শনিবার সকালে আমার মেয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, যৌতুকের জন্য নববধুকে মারধরের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। ইতোমধ্যে নববধূকে নির্যাতনের ঘটনায় তার শ্বশুর সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।