বাংলাদেশ ক্রিকেটে দেশি কোচদের উত্থান এখন চোখে পড়ার মতো। সাবেক ক্রিকেটার থেকে শুরু করে অভিজ্ঞ কোচরা নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করছেন জাতীয় দলসহ বিভিন্ন পর্যায়ে। দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে ফিরেছেন দেশি কোচ, বিসিবির পরিচালক পদেও যুক্ত হয়েছেন নাজমুল আবেদিন ফাহিমের মতো অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক। তবে দেশি কোচদের জন্য আলাদা একটি কাঠামোর দাবি তুলেছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও অভিজ্ঞ কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন।
গতকাল মিরপুরে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালনের ফাঁকে সুজন তার ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি জাতীয় দলের জন্য একটি ‘ছায়া কোচিং প্যানেল’ গঠনের প্রস্তাব দেন, যা মূল কোচিং স্টাফের পাশাপাশি কাজ করবে।
সুজন বলেন, 'আমার মনে হয়, জাতীয় দলের প্রধান কোচের অধীনে একটি ছায়া কোচিং টিম থাকা জরুরি। এই কোচরা জাতীয় দলের সঙ্গে সফর করবে, মূল কোচিং স্টাফের সঙ্গে কাজ করবে। ব্যাটিং, স্পিন কিংবা পেস বোলিং—সবকিছুর জন্যই আলাদা ছায়া কোচ থাকা দরকার।'
তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, 'যখন জাতীয় দল বিদেশ সফরে যাবে, তখন দেশের খেলোয়াড়দের পরিচর্যা করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে। ১৫ জনের স্কোয়াড তো থাকেই, কিন্তু আরও ১৫ জনকে তৈরি রাখা জরুরি। কারণ ইনজুরি, অফ ফর্ম—নানান কারণে পরিবর্তন আসতেই পারে।'
নিজের ভবিষ্যৎ কোচিং ক্যারিয়ার নিয়ে সুজন বলেন, 'বিসিবি হয়তো আমাকে বড় কোচ হিসেবে যোগ্য মনে করে না। এটা নিয়ে আমি চিন্তিত নই। যদি কোনো সময় দায়িত্বের ডাক পাই, তখন ভেবে দেখব। তবে বাংলাদেশে এখন অনেক ভালো কোচ তৈরি হচ্ছে। তরুণ কোচদেরও সুযোগ দিতে হবে। আমাকেই সব করতে হবে এমন কোনো কথা নেই।'
সুজন জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ স্কোয়াড গঠনের ব্যাপারেও কথা বলেন। তিনি মনে করেন, শুধু ১৫ জনের স্কোয়াড বানিয়ে বসে থাকলে চলবে না, বরং আরও ১৫ জনকে প্রস্তুত রাখতে হবে। উদাহরণ হিসেবে শামীম পাটোয়ারির কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরে থাকা প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, 'আমাদের ১৫ জন অতিরিক্ত খেলোয়াড়কে বিসিবির অধীনে রাখা উচিত। তারা বিসিবির তত্ত্বাবধানে অনুশীলন করবে, স্কাউটিংয়ের আওতায় থাকবে, ডায়েট ও অন্যান্য বিষয়ে নজরদারির মধ্যে থাকবে। এতে জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ লাইনআপ নিশ্চিত হবে।'
জাতীয় দলে দেশি কোচদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যৎ ক্রিকেটারদের প্রস্তুত রাখার এই ভাবনা বাস্তবায়িত হলে, বাংলাদেশ ক্রিকেট আরও সুসংগঠিত হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।