বগুড়ার ধুনটে ২ ফ্রিল্যান্সারকে অপহরণের পর মুক্তিপণ নিয়ে পালানোর পথে ডিবির ৫ সদস্যসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কুন্দারহাট হাইওয়ে পুলিশ। সোমবার ভোর ৪টার দিকে শাজাহানপুর উপজেলার বীরগ্রাম এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
অপহরণ দুই ফ্রিল্যান্সার হলেন- ধুনট উপজেলার দিগলকান্দি এলাকার রাব্বি (১৯) ও জাহাঙ্গীর (২৪)। অপরদিকে গ্রেপ্তাররা হলেন— রাজশাহীর মেট্রোপলিটন ডিবিতে কর্মরত এসআই শাহীন মোহাম্মদ অনু ইসলাম, কনস্টেবল রিপন মিয়া, আবুল কালাম আজাদ, মো. মাহবুর আলম, মো. বাশির আলী এবং গাড়ির চালক মো. মেহেদী হাসান। তাদের কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকা, ১টি ওয়াকিটকি, ১টি হ্যান্ডকাফ, ৭টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা জানান, রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ফ্রিল্যান্সার রাব্বি ও জাহাঙ্গীরের বাড়িতে ডিবি পরিচয়ে হাজির হয় এসআই শাহীন ও অন্যরা। এসময় ক্যাসিনো খেলার অভিযোগে ২ জনকে অপহরণ করে তারা। পরে ২ ফ্রিল্যান্সারকে শেরপুর উপজেলার মির্জাপুরে এনে পরিবারের কাছে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়, না দিলে হত্যার পর লাশ গুম করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
হুমকি দ্রুত জাহাঙ্গীরের পরিবার রাতে ২ লাখ টাকা নিয়ে এসে পুলিশকে দিলে তাকে ছেড়ে দেয়। পরে রাব্বির পরিবার বিকাশে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিলে তাকেও ছেড়ে দেয়। এরপর মোটরসাইকেল নিয়ে ডিবি পুলিশের গাড়িটি অনুসরণ করে রাব্বির ভাই। ভোর ৪টার দিকে নন্দীগ্রামে দেখা হয় হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির টহলরত দলের সঙ্গে, এসময় তাদের সবকিছু খুলে বললে অপহরণকারীদের থামানোর চেষ্টা করে। পরে ডিবির গাড়িটি ইউটার্ন নিয়ে শাজাহানপুর উপজেলার বীরগ্রাম এলাকায় পৌঁছালে আটক করে কুন্দারহাট হাইওয়ে থানা পুলিশ।
কুন্দারহাট হাইওয়ে থানা পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে, আরএমপি ডিবিতে কর্মরত কনস্টেবল ওহাবের বাড়ি বগুড়ার ধুনটের দিগলকান্দি গ্রামে। সে তাদের এই টিমকে জানিয়েছে তার বাড়ির পাশে রাব্বি ও জাহাঙ্গীর ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সেই সংবাদের ভিত্তিতে আরএমপি কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অনৈতিক সুবিধা লাভের উদ্দেশ্যে এ কাজ করেছেন তারা।
ধুনট থানার ওসি সাইদুল ইসলাম বলেন, হাইওয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মুক্তিপণ আদায়ের টাকাসহ আরএমপি ডিবির ৫ সদস্যসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। বিকালেই গ্রেপ্তারদের আদালতে পাঠানো হবে।