বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২
দেশ রূপান্তর

কর্মক্ষেত্রে সাফল্যের জন্য ঝুঁকি নিতেই হয়

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৫, ১২:২৬ এএম

চাকরি জীবনে সাফল্য বয়ে আনতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই ঝুঁকি নিতে হয়। নিজের কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়। আবার নতুন চাকরি বা পুরনো চাকরিতে নতুন দায়িত্ব, কখনো কখনো ভয়ের ব্যাপার হয়েও দাঁড়ায়? অনেকেই এই ঝুঁকি সামলাতে না পেরে হয় চাকরি হারান নয় পদোন্নতি বা নতুন দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত হন। কীভাবে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে জেনে নিন।

এক. ঝুঁকি মূলত সমাধানের পথ না পাওয়ার কারণে বা ‘অজানা’ থেকেই উৎপত্তি। যা কিছু আবছা, অজানা, অস্পষ্ট এবং ধোঁয়াটে সে সবই ঝুঁকির কারণ। আর যদি সমাধান জানা থাকে! তাহলে ঝুঁকি নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। সুতরাং যত অজানা তত ঝুঁকি নেওয়ার সম্ভাবনা। শুধু একবার সাহস করে এগিয়ে যান, জেনে নিন অজানা বিষয়টি।

দুই. অজানা বিষয় জানা হয়ে গেলেই অধিকাংশের ভেতর আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে ঠিক এর উল্টোটাও হয়। যখন অজানা ছিল তখন খুব সাহস ছিল, জানার পরে ভয় পেয়ে বসেছে। মনে রাখবেন এ ভয় খুবই সাময়িক। বরং সামনের দিকে অনন্ত যাত্রার আগে শক্তি সঞ্চয়ের জন্য কিছুটা পিছিয়ে আসার মতো। দেখবেন ঝুঁকি নেওয়ার কারণগুলো আস্তে আস্তে কমে আসছে।

তিন. যে নতুন দায়িত্বে বা পদে আপনাকে দেওয়া হচ্ছে তার দায়িত্ব-কর্তব্যগুলো খুব ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করুন। যে দিকগুলো বুঝতে পারছেন না, নোট নিন। নতুন দায়িত্ব পেয়েই ঝুঁকিমূলক কাজে হাত দেবেন না। ঝুঁকি নিলেও বুঝেশুনে নিন।

চার. নোট করা পয়েন্টগুলো নিয়ে ভাবুন, কাছের বন্ধুর বা পরিচিত পেশাদার কারও পরামর্শ নিন। আলোচনা করুন। যত বেশি আলোচনা করবেন, বিষয়টি পরিষ্কার হবে। আপনার ভয়ও কমতে শুরু করবে।

পাঁচ. অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন। ঝুঁকি কমাতে পরামর্শ নেওয়ায় নিজের ছোট হয়ে যাওয়ার কিছু নেই। আপনি সফল হলে বাহবা আপনারই প্রাপ্য হবে। সংকোচ করবেন না। ঝুঁকি এড়ানোর যাবতীয় পথে সমাধান খুঁজুন। শুভাকাক্সক্ষী এবং অভিজ্ঞরা অনেকভাবেই আপনাকে সাহায্য করতে পারেন।

ছয়. বর্তমান সময় ইন্টারনেটের। এমন কিছু খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল যার কিছু না কিছু আপনি ইন্টারনেটে পাবেন না। আপনার নতুন চাকরি বা দায়িত্ব সম্পর্কে তথ্য ও তত্ত্ব জেনে নিন। সাহস পাবেন। যে বিষয়ে ঝুঁকি নিতে হচ্ছে তার কেসস্টাডি দেখুন।

সাত. টিভি প্রোগ্রাম, বই, পেশাভিত্তিক ম্যাগাজিন এ সবও এখন অনেক কাজে লাগে। অনেক নতুন নতুন বিষয় জানা যায়, যা আপনার নতুন চাকরি, দায়িত্ব বা পেশা সংক্রান্ত। মোট কথা হাতের নাগালে যত সূত্র আছে তাকে ঠান্ডা মাথায় ব্যবহারের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

আট. যা আগে কখনোই ছিল না, সেসব কাজ কী করে শুরু হয়েছিল? যার আগের কোনো তথ্য নেই কিছু নেই, অভিজ্ঞতা আছে এমন কোনো লোক নেই, পরামর্শ নেওয়ার মতোও এমন কেউ নেই হাতের নাগালে। তাহলে কী উপায়? সেক্ষেত্রে আপনি নিজের মেধা খাটিয়ে যা করবেন তা-ই মাইলফলক হয়ে থাকবে। ভুল হলেও তা শুদ্ধপথের ঠিকানা পাওয়ার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। তাই তো বলে, ব্যর্থতাই সাফল্যের চাবিকঠি। তাই প্রথম ধরনের কাজগুলোকে সাহস করে ঝুঁকি নিয়েই করতে হয়। শুধু খেয়াল রাখতে হয়, বিফল হলে বিকল্প কোন পথে ক্ষতি পোষানো যাবে।

নয়. ভুল হলে ঘাবড়াবেন না। নতুন দায়িত্বে অনেকেই আপনার প্রতি স্বাভাবিকভাবেই সহানুভূতিশীল থাকবেন। শুধু একটি দিকেই খেয়াল রাখবেন যাতে এক ভুল একবারের বেশি না হয়। ভুল থেকে শিখুন, অন্যের ভুল দেখেও শিখুন।

দশ. আত্মবিশ্বাস বাড়ান। এমন অনেক সমস্যা প্রত্যেকের কর্মজীবনেই কখনো না কখনো আসে যেখানে আপনি কিছুই জানেন না, কিছুই কারও কাছ থেকে জানতে পারছেন না। একদম একা লাগছে। তবুও দায়িত্ব এসেছে সমস্যা মোকাবিলার। স্রেফ নিজের ওপর ভরসা রাখুন। আপনি অবশ্যই পারবেন। নির্দ্বিধায় এগিয়ে যান। জয় আপনার হবেই হবে। আত্মবিশ্বাস ঝুঁকি কমায়।

সর্বশেষ সর্বাধিক পঠিত আলোচিত